গাজায় হামলার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে, ইসরায়েলে এমন সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি স্থগিত করবে জার্মানি। গেল শুক্রবার জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্ৎস এ তথ্য জানান।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বৃদ্ধির পরিকল্পনার প্রেক্ষিতে প্রথমবারের মতো সামরিক সহায়তা সীমিত করার পদক্ষেপ এটি। মূলত দেশটির জনগণ ও ছোট জোট সহযোগী দলের চাপের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এক বিবৃতিতে মার্ৎস ইসরায়েলের হামাসকে নিরস্ত্র করার অধিকার এবং ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির দাবির কথা স্বীকার করলেও তিনি বলেন, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আরও কঠোর সামরিক পদক্ষেপের এই সিদ্ধান্তের ফলে এসব লক্ষ্যগুলো অর্জন কতটা সম্ভব হবে তা বোঝা কঠিন হয়ে পড়েছে।
জুন মাসে একটি জরিপে দেখা গেছে, জার্মান নাগরিকের ৭৩ শতাংশই অস্ত্র রপ্তানি কঠোর নিয়ন্ত্রণ চান, যার মধ্যে ৩০ শতাংশ সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার পক্ষে।
জোট সরকারের সহ-চ্যান্সেলর ও অর্থমন্ত্রী লার্স ক্লিংবেইল বলেন, ‘এটি সঠিক সিদ্ধান্ত। গাজায় মানবিক কষ্ট অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।’
অন্যদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এবং পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এখনও এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
ফ্রাঙ্কফুর্টের অ্যান ফ্রাঙ্ক শিক্ষা কেন্দ্রের পরিচালক মেরন মেন্ডেল বলেন, ‘রাজনৈতিক ও নৈতিক দিক থেকে এটি নেতানিয়াহু ও তার নীতির জন্য এক কঠিন ধাক্কা।’
স্টকহোম আন্তর্জাতিক শান্তি গবেষণা ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) জানায়, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ইসরায়েলের অস্ত্র আমদানির ৩০ শতাংশ জার্মানি থেকে সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে নৌযুদ্ধযান, বিশেষ করে গাজার যুদ্ধে ব্যবহৃত সা’আর ৬-ক্লাস ফ্রিগেট। সাঁজোয়া ট্রাক, ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র ও গোলাবারুদও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ বন্দিদের মুক্তি এবং যুদ্ধবিরতি আলোচনা দেশের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বলে উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি তিনি ইসরায়েলকে পশ্চিম তীরের কোনো অংশ দখল না করার জন্য সতর্ক করেছেন।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্ৎস জিম্মিদের মুক্তি এবং যুদ্ধবিরতি আলোচনা তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বলে উল্লেখ করার পাশাপাশি ইসরায়েলকে পশ্চিম তীরের কোনো অংশ দখল না করার জন্য সতর্ক করেছেন।
জার্মান পার্লামেন্ট জানায়, হামাসের হামলার পর ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে ১৩ মে ২০২৫ পর্যন্ত ইসরায়েলের জন্য ৫৬৪ মিলিয়ন ডলার মূল্যের সামরিক সরঞ্জামের রপ্তানি লাইসেন্স অনুমোদিত হয়েছে। হামাসের হামলার পরবর্তী কয়েক মাসে জার্মানি ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি প্রায় দশগুণ বৃদ্ধি করেছে।