আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় বুধবারও (৬ আগস্ট) দেশের শেয়ারবাজারে ব্যাংক কোম্পানিগুলোর শেয়ার দামে ঢালাও দরপতন হয়েছে। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। একই সঙ্গে ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস শেয়ারবাজার পতনের ধারায় থাকলো।
এর আগে গত সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবস এবং চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়। একই সঙ্গে বাড়ে লেনদেনের গতি। ডিএসইতে চলতি বছরে প্রথমবারের মতো এক হাজার ১০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয় গত রোববার। তবে এর পরেই দেশের শেয়ারবাজারে আবার দরপতনের ধারা দেখা যাচ্ছে।
বুধবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মিলে। কিন্তু প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার আগেই একের পর এক ব্যাংকের শেয়ার দাম কমতে থাকে। ব্যাংকের শেয়ার দাম কমার প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যহত থাকে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে অন্য খাতের ওপরও। ফলে দাম কমার তালিকা বড় হওয়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৫৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৪টির। আর ৬২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অপরদিকে তালিকাভুক্ত ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে মাত্র ২টি ব্যাংকের শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৯টি ব্যাংকের। আর ৫টি ব্যাংকের শেয়ার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৪৭১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৮৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১২৫ পয়েন্টে নেমে গেছে।
মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮৮৯ কোটি ৯৫ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯১১ কোটি ৭৩ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ২১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে সিটি ব্যাংক। কোম্পানিটির ৪৫ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকার। ৩৩ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- মালেক স্পিনিং, যমুনা ব্যাংক, বেক্সিমকো ফার্মা, উত্তরা ব্যাংক, ওরিয়ন ইনফিউশন, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস এবং বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৪৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৭টির এবং ৩১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।