যুক্তরাষ্ট্রের সংশোধিত পাল্টা শুল্ককে ‘শাপেবর’ বলছেন চট্টগ্রামের তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানিকারকরা। প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর মধ্যে কারও সমতুল্য, কারও চেয়ে বাংলাদেশের ওপর আরোপিত শুল্ক কম। এটাকে সুযোগ হিসেবে দেখছেন ব্যবসায়ীরা। রপ্তানি বাড়াতে স্বল্প সুদ ও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ সুবিধাসহ সরকারের নীতিমালা সহজীকরণ চান ব্যবসায়ীরা।
ট্রাম্পের নতুন পাল্টা শুল্ক প্রতিযোগী অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক তুলনামূলক কম। পোশাক রপ্তানিতে ভারত ছাড়াও বাংলাদেশের বড় প্রতিদ্বন্দ্বী শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়া। কিন্তু ওই দেশগুলোর ওপর বাংলাদেশের প্রায় সমতুল্য শুল্ক নির্ধারিত হয়েছে।
ট্রাম্পের নতুন পাল্টা শুল্ক চীন ও মিয়ানমারের ওপর ৪০ শতাংশ, ভারত ২৫ শতাংশ, শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনামের ২০ শতাংশ এবং পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার ১৯ শতাংশ। যেখানে বাংলাদেশের জন্য নির্ধারিত হয়েছে ২০ শতাংশ।
চট্টগ্রামের তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানিকারকরা বলছেন, এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিয়মিত ক্রয়াদেশের পাশাপাশি নতুন ক্রয়াদেশ পাওয়া গেলে বাড়বে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন। এতে নতুন নতুন কর্মসংস্থানও তৈরি হবে, পাশাপাশি সমৃদ্ধ হবে দেশের অর্থনীতি।
চট্টগ্রামের তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া তৈরি পোশাকের বড় অংশ তৈরি হয় চট্টগ্রামের কারখানাগুলোতে। চট্টগ্রামের প্রায় আড়াইশ কারখানায় তৈরি পোশাক সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়। বর্তমানে চীন ও ভারতের পণ্যে ট্যারিফ বেশি হওয়ার সুবাদে এরই মধ্যে দেশ দুটি থেকে আমদানি হতো এমন অনেক এফওসি (ফ্রি অব কস্ট) অর্ডার (ক্রয়াদেশ) পেয়েছেন চট্টগ্রামের রপ্তানিকারকরা। এসব ক্রয়াদেশে সরকারি নীতিমালা সহজীকরণ ও পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ানো গেলে তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন করে কর্মসংস্থান সৃষ্টির কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা।
তারা বলছেন, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া পণ্যে আগে থেকেই ১৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারিত ছিল। কিন্তু চলতি বছর ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন দেশের জন্য নতুন করে পাল্টা শুল্ক আরোপ করে। বাংলাদেশের জন্য যা ছিল ৩৫ শতাংশ। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় আরোপিত পাল্টা শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে স্বস্তি ফিরেছে সরকার ও বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ মোট রপ্তানি আয় করে ৪৮ হাজার ২৮৪ মিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি হয়েছে আট হাজার ৬৯২ দশমিক ৩৫ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে তৈরি পোশাক অন্যতম।