যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রফতানিতে ভিয়েতনামের ওপর ট্রাম্প প্রশাসন আরোপিত পাল্টা শুল্কহার ২০ শতাংশ। মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের অন্যতম আরেক প্রতিযোগী ভারতের ওপর এ হার ২৫ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রফতানিতে ভিয়েতনামের ওপর ট্রাম্প প্রশাসন আরোপিত পাল্টা শুল্কহার ২০ শতাংশ। মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের অন্যতম আরেক প্রতিযোগী ভারতের ওপর এ হার ২৫ শতাংশ। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে ১৯ শতাংশ। হোয়াইট হাউজের নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী ঘোষণায় এ প্রতিযোগী দেশগুলোর কাছাকাছি রয়েছে বাংলাদেশের ওপর আরোপ করা শুল্কহার, যা ২০ শতাংশ। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বাক্ষরিত নির্বাহী আদেশে ৭০টিরও বেশি দেশের ওপর ১০ শতাংশ থেকে ৪১ শতাংশ পর্যন্ত রেসিপ্রোকাল (পারস্পরিক) বা পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তিনি একে বর্ণনা করেছেন দীর্ঘদিনের বাণিজ্যগত অসাম্য দূর করার পদক্ষেপ হিসেবে।
যুক্তরাষ্ট্রে সেনসাস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৮৩৬ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছে। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করেছে ২২১ কোটি ডলারের পণ্য। এ হিসাবে বাংলাদেশের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত বা বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি ৬১৫ কোটি ডলারের। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে মোট রফতানির ৮৭ শতাংশই তৈরি পোশাক। এ শিল্প মালিকরা বলছিলেন ভিয়েতনাম ছাড়া বাকি তিনটি দেশ—চীন, ভারত ও পাকিস্তানের ওপর আরোপিত শুল্কহার যদি বাংলাদেশের কাছাকাছি হয়, তাহলে খুব বেশি শঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্জন হলো ট্রাম্প প্রশাসনের কাছ থেকে প্রতিযোগী দেশগুলোর কাছাকাছি শুল্কহার আদায় করা।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর শুল্কহার কমে আসায়, একে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশের শুল্ক আলোচকদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘এটি সুস্পষ্ট এক কূটনৈতিক সাফল্য।’ গতকাল এক অভিনন্দন বার্তায় তিনি বলেন, ‘শুল্কহার ২০ শতাংশ করা হয়েছে, যা আগে আরোপিত শুল্কহারের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম। এর মাধ্যমে আমাদের আলোচকরা অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতা এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থরক্ষা ও সেটাকে আরো এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে অবিচল প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছেন।’
পোশাক পণ্য প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান গতকাল বণিক বার্তাকে বলেন, ‘যে ট্যারিফ বাংলাদেশের জন্য ঘোষণা করা হয়েছে এটা আমাদের জন্য এক ধরনের স্বস্তি এনে দিয়েছে। এজন্য যে বাংলাদেশের ওপর শুল্কহার আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ-ভারত, পাকিস্তান ও ভিয়েতনামের সমান অথবা তাদের চেয়ে কম। আপাতত আমরা মনে করি, যে আশঙ্কা ছিল যে অন্যদের তুলনায় আমাদের ট্যারিফ যদি ১০-১৫ শতাংশ বেশি হয়, তাহলে ব্যবসা সরে যাওয়া। সেই আশঙ্কাটা আপাতত আর নেই।’
তবে ট্রাম্পের সর্বশেষ ঘোষণার আগেই পোশাক তৈরিতে কাঁচামালের জন্য চীননির্ভর বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যতের ব্যবসা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক ক্রেতারা। গত মঙ্গলবার ‘২০২৫ ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি বেঞ্চমার্কিং স্টাডি’ শীর্ষক এক জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে। যেখানে বিভিন্ন দেশের পোশাক শিল্প সম্পর্কে তাদের পর্যবেক্ষণ ও মতামত উঠে এসেছে। জরিপে শীর্ষস্থানীয় ৩০টি মার্কিন ফ্যাশন ব্র্যান্ড, খুচরা বিক্রেতা, আমদানিকারক এবং পাইকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের মতামত নেয়া হয়েছে, যার মধ্যে অনেকগুলোই দেশটির সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতা। জরিপ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিষয়ে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি যুক্তরাষ্ট্রে নতুন বাণিজ্য বিধিনিষেধের মুখে পড়তে পারে। এর পেছনে সম্ভাব্য দুটি কারণ চিহ্নিত করেছেন ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। এগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাড়তে থাকা বাণিজ্য উদ্বৃত্ত এবং বস্ত্র ও পোশাকের কাঁচামালের ক্ষেত্রে চীনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন কোম্পানিগুলোকে পোশাক ক্রয়ের উৎসকে বৈচিত্র্যময় করতে চীননির্ভরতা কমানোর প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ থেকে সোর্সিং উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো থেকে পিছিয়ে রাখছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের নতুন নীতির প্রভাবে ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন কোম্পানিগুলো ব্যাপক চাপে রয়েছে। জরিপে অংশ নেয়া ৭০ শতাংশেরও বেশি উত্তরদাতা জানিয়েছেন, সামগ্রিকভাবে বাড়তি শুল্ক তাদের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। সোর্সিং খরচ বেড়েছে, মুনাফার পরিমাণ কমেছে, ভোক্তা পর্যায়ে পণ্যের দাম বেড়েছে। প্রায় ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বিক্রি কমার কথা জানিয়েছে। ২২ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে কর্মী ছাঁটাই করেছে। দুই-তৃতীয়াংশের বেশি প্রতিষ্ঠান অর্ডার স্থগিত বা বাতিল করেছে। অনেকে শুল্কের খরচ সরবরাহকারীদের ভাগ করে নেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে, যা অনেক ছোট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার ঝুঁকিতে ফেলেছে।
পোশাক ক্রেতাদের উদ্বেগকে অস্বাভাবিক মনে করেন না বাংলাদেশের পোশাক প্রস্তুতকারকদের প্রতিনিধিরা। তারা বলছেন, চাপের মুখে থাকা মার্কিন ক্রেতারা যে গন্তব্যে থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে পোশাক পাবেন সেই গন্তব্যের দিকেই ধাবিত হবেন। তবে আপাতত ট্রাম্প ঘোষিত শুল্কহার বাংলাদেশের জন্য স্বস্তির।
ক্রেতাদের উদ্বেগ বা শঙ্কা স্বাভাবিক উল্লেখ করে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান বলেন, ‘আপনি যতই কম পয়সায় কাজ করেন, যতই ভালো কোয়ালিটি করেন। দিনশেষে জাহাজ ভাড়া, ট্যারিফ, ডিউটি এগুলো যোগ করে ঘরে পৌঁছানো পর্যন্ত কত টাকা লাগে সেই হিসাবটাই করেন ক্রেতারা। আমাদের চেয়ে কম পয়সায় যদি কোনো দেশ পণ্য দিতে পারে তারা সেখানে যাবে।’
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘চীন ব্যতীত অন্য দেশগুলোর জন্য প্রায় সমান হারে শুল্ক নির্ধারণ করা একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। বিশেষ করে বাংলাদেশসহ পোশাকপ্রধান রফতানিকারক দেশগুলোর জন্য এ শুল্ক ১৯-২০ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকায় আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা রক্ষা পেয়েছে। তবে এ সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য আমাদের উদ্যোক্তাদের আরো দক্ষ ও সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে, মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে মার্কিন ক্রেতাদের বোঝাতে হবে যে এ আমদানি শুল্ক আমদানিকারকদের বহন করতে হবে এবং পরিশেষে এটি চূড়ান্তভাবে ভোক্তাকেই বহন করতে হবে। তবে এতে পণ্যের মূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে, যা বিক্রি হ্রাসের সম্ভাবনা তৈরি করবে। এ পরিস্থিতিতে অর্ডার কিছুটা কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে ক্রেতারা অন্যায্যভাবে দাম কমানোর চেষ্টা করতে পারেন। আর বাংলাদেশে তৈরি হয় না এমন কোনো কাপড় দিয়ে ক্রেতা যদি পোশাক বানাতে বলেন তাহলে আমাদের বাধ্য হয়েই চীন বা অন্যান্য উৎস থেকে কাপড় সংগ্রহ করতে হয়। ফলে ক্রেতারা নকশা করার সময় যদি কাঁচামালের ক্ষেত্রে চীননির্ভরতা কমানোর বিষয়টি বিবেচনায় নেন তাহলে স্বাভাবিকভাবেই বিধিনিষেধ আরোপের ঝুঁকি কমে আসবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের রফতানিকারকদের তেমন কিছু করার নেই।’
আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর জন্যও শুল্কের হার প্রায় একই রকম বা তার চেয়ে বেশি হওয়ায় এ মুহূর্তে শক্তিশালী দরকষাকষিই একমাত্র উপায় উল্লেখ করে ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘ক্রয়াদেশ অন্য যে দেশেই যাক তাদের কমপক্ষে আমাদের সমান শুল্ক দিতেই হবে। বরং আমাদের এখানে ক্রয়াদেশ দিলে চীন বা ভারত থেকে শুল্ক বিবেচনায় সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে। আমরা যদি বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে টিকে থাকতে পারি, তবে ভবিষ্যতে চীন ও ভিয়েতনাম থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অর্ডার বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের শিল্পকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। বিশেষ করে রফতানি বাড়াতে নীতিগত সহায়তা, স্বল্পসুদে ঋণের সুবিধা জরুরি। পাশাপাশি বিদেশী বিভিন্ন সংস্থার চাপ ও শর্ত মোকাবেলা করে দেশের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ চুক্তি নিয়ে প্রথম দুই দফার আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরো বেশি পণ্য আমদানির মাধ্যমে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনাসহ বেশকিছু বাণিজ্যিক বাধ্যবাধকতা-সংক্রান্ত শর্ত দিয়েছিলেন দেশটির কর্মকর্তারা। বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে সব শর্ত মানা সম্ভব না হলেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশকিছু পণ্য আমদানির মাধ্যমে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনা সম্ভব। যার অংশ হিসেবে দেশটি থেকে গম, তুলা, এলএনজি ও উড়োজাহাজ কেনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংকে প্রাথমিকভাবে ২৫টি ওয়াইড বডি উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাবও দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া চুক্তির প্রাথমিক প্রস্তাবের জবাবে এসব প্রস্তাব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। যার ওপর ভিত্তি করে তৃতীয় দফা আলোচনা শুরু হয়। এ আলোচনা শেষ হতে না হতেই নির্বাহী আদেশ জারি করেন ট্রাম্প, যা নিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন পণ্য রফতানিকারক এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিরা।
ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানিয়েছেন, ‘বাণিজ্য উপদেষ্টা তার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় আমরা প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় থাকব। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের রফতানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে আমরা ২০ শতাংশের নিচে প্রত্যাশা করেছিলাম।’
তবে পাল্টা শুল্কের হ্রাস করা হারে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই, বলছেন বিশ্লেষকরা। তারা মনে করেন, প্রতিযোগীদের তুলনায় সহনীয় শুল্কহার আদায়ের বিনিময়ে বেশি দামে হলেও দেশটি থেকে পণ্য আমদানিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। এছাড়া নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্টের আওতায় থাকা রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ চুক্তিতে অনেক বিধিনিষেধ ও শর্তের বিষয় আছে, সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান কতটা সুসংহত বা স্বার্থ কতটা সুরক্ষিত, সেসব বিষয় বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে। বাংলাদেশকে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে একটি বৈচিত্র্যময়, প্রতিযোগিতামূলক এবং সহনশীল বাণিজ্য কৌশল প্রতিষ্ঠা করা যায়।
গত ২ এপ্রিল বাণিজ্য ঘাটতির কথা উল্লেখ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর উচ্চ হারে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তখন বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। পরে ৯ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর ওই শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। এ সময় শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্ন দেশকে আলোচনার সুযোগ দেয় ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্রের তিন মাসের সময়সীমা গত ৯ জুলাই শেষ হয়। এর আগের দিন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়ে ট্রাম্প জানান, বাংলাদেশের পাল্টা শুল্ক ২ শতাংশ কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়েছে। যদিও ৯ জুলাইয়ের পর পাল্টা শুল্ক কার্যকর করেনি মার্কিন প্রশাসন। শুল্কের হার কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তির জন্য ৩১ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন দেশকে সময় দেয়া হয়।
পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছে। শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে টানা তিনদিন আলোচনা করেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। গত মঙ্গল ও বুধবারের পর বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো আলোচনা করা হয়। এ আলোচনায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। প্রতিনিধি দলে আরো আছেন প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. নাজনীন কাওসার চৌধুরী। দুদিনের বৈঠকেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের কর্মকর্তারা ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়েছেন।