বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই মুহুর্তে যদি সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি যাওয়া হয়, তাহলে নিজেদের মধ্যে একটি বড় ধরনের বিভেদ-বিভাজন তৈরি হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ পরিদর্শনকালে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি এসব কথা বলেন। দত্তপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ আয়োজন করা হয়।
শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, যেটা বলা হচ্ছে পিআর পদ্ধতি- তারেক রহমান স্পষ্টভাবে বলেছেন, বিভিন্ন মতবাদ আজকে যখন আসে দুই-একটা রাজনৈতিক দলের পক্ষে, দুই-একটা রাজনৈতিক ব্যক্তির মত থেকে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই মতবাদ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। যেটা বলা হচ্ছে পিআর পদ্ধতি- তারেক রহমান স্পষ্টভাবে বলেছেন, পৃথিবীর অনেক দেশেই পিআর পদ্ধতি আছে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা সম্ভব না।
বিএনপির এ নেতা বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই মুহুর্তে আমরা যদি সেই পিআর পদ্ধতিতে যাই, এতে নিজেদের মধ্যে একটি বড় ধরনের বিভেদ-বিভাজন তৈরি হবে। ফ্যাসিস্ট এখানে বড় সুযোগ পেয়ে যাবে। আওয়ামী লীগের যে ফ্যাসিস্ট, যারা সরাসরি আপনাকে আমাকে আঘাত করেছে, দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে, দেশের রাজনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে, সামাজিক ব্যবস্থা, যে কাজগুলো আমরা করতে পারি নাই, প্রশাসনকে যারা জিম্মি করেছিল, ধ্বংস করে দিয়েছিল, তাদের কোনভাবেই সুযোগ দেওয়া যাবে না। তাদের বিচারটা হল আগে।
এ্যানি আরো বলেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস লন্ডনে গিয়েছেন। একটি সুযোগে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রত্যেকটা কথার মধ্যে বিশ্বাস আস্থা সম্মান জড়িত। দেশের কথা, জাতির কথা, বাংলাদেশের কথা, ব্যক্তিগত কোনো কথা না। এই যে সম্মানের যে জায়গা তৈরি হয়েছে, দেশবাসী এই সম্মানে সম্মানিত। আমরা সাহস ও মনোবল পেয়েছি। আমরা খুশি হয়েছি, আনন্দিত হয়েছি।
একটি উপযুক্ত সময় রোজার আগে ফেব্রুয়ারি মাস শীতের মৌসুম, এই সময়ে যদি একটি সুন্দর নির্বাচন হয়, এই নির্বাচনটা স্বতস্ফূর্ত হবে, উৎসবমুখর হবে, আমার আপনার চাহিদা অনুযায়ী হবে, নিরপেক্ষ হবে, আমরা সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগীতা করবো।
তিনি বলেন, ফ্যাসিস্টের বিচারের জন্য আমাদের এখন থেকে একটি সুদৃঢ় ঐক্য গড়তে হবে। সেই ঐক্যের ভিত্তিতে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। এই ঐক্যের ভিত্তিতে দেশটাকে গড়তে চাই, নতুন করে নির্মাণ করতে চাই। নির্মাণ করতে হলে একেক রাজনৈতিক দলের একেকটা বক্তব্য থাকতে পারে, মতবেদ থাকবে, প্রতিযোগীতা থাকবে, কিন্তু বৃহত্তর স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, দেশ গড়ার স্বার্থে আমাদের ক্ষুদ্র স্বার্থ ত্যাগ করে বৃহত্তর স্বার্থের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। সবাই ঐক্যবদ্ধ আছেন বলে আমরা বিশ্বাস করি এবং থাকবেন বলে আমরা সরকারের কাছে সবাই মিলে আহবান জানাচ্ছি, সুন্দরভাবে একটি স্বাধীন যে নির্বাচন কমিশন, নিরপেক্ষ যে অবস্থান সেখান থেকে একটি সুন্দর নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। আমরা বলেছি, যারা ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করেছি যুগপৎ সংগ্রাম-লড়াই করেছি, তারা সবাই মিলে জাতীয় ঐক্যমতের সরকার গঠন করব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য হাফিজুর রহমান, চন্দ্রগঞ্জ থানা বিএনপির আহ্বায়ক এম বেলাল হোসেন, সদস্য সচিব মো. আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম ইউসুফ ভূঁইয়া, সোহেল মাহমুদ, শরীফ উদ্দিন পাটওয়ারী, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব আবদুল আলিম হুমায়ুন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মহসিন কবির স্বপন, জেলা কৃষকদলের সভাপতি মাহবুব আলম মামুন ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল প্রমুখ।