টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মহাসড়কে ছিনতাইয়ের সময় দুই পুলিশ কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার (২৫ মার্চ) রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার ধেরুয়া এলাকায় স্থানীয়রা ওই পুলিশ কনস্টেবলদের ছিনতাই করার সময় আটক করেন। পরে মহাসড়কের দেওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির কাছে সোপর্দ করা হয়।
তারা হলেন, জেলার বাসাইল উপজেলার মিরেকপুর গ্রামের কৈলা রাজবংশীর ছেলে রিপন রাজবংশী এবং সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার কোদালিয়ার ময়নাল হকের ছেলে মো. মোহসীন মিয়া। দুই কনস্টেবল মানিকগঞ্জের দৌলতপুর থানায় কর্মরত আছেন। এ ঘটনায় সোমবার রাতেই তাদের দুইজনকেই সাময়িক বহিষ্কার করেছেন মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান।
ওই রাতেই মধুপুর উপজেলার পিকআপ চালক রানা বাদী হয়ে দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন মির্জাপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম।
জানা যায়, মহাসড়কের উপজেলার ধেরুয়া ফ্লাইওভার ব্রিজের দক্ষিণ পাশে একটি পিকআপ সিগনাল দেয়। এই সময় চালক ও হেলপারকে গাড়ি থেকে নামিয়ে পাশে দেওহাটা পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে ১১ হাজার ৫৫০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে চালক ও হেলপারদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে আটক করে। এ সময় আটক পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে ৩০ হাজার ২১০ টাকা, একটি মোটরসাইকেল, একটি হ্যান্ডকাফ, পুলিশের পোশাক ও বেল্ট উদ্ধার করা হয়।
পুলিশি তল্লাশির নামে মির্জাপুর হতে ধেরুয়া পর্যন্ত রাতে মহাসড়কে কয়েকটি পয়েন্টে প্রতিনিয়ত ট্রাক, মোটরসাইকেল, পিকআপের চালকসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের থামিয়ে পুলিশ ইউনিফর্ম পরিহিতরা সব ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ফলে অনিরাপদ হয়ে পড়েছে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল। গত ১১ মার্চ সোমবার রাতে মহাসড়কের পুষ্টকামুড়ী চরপাড়া এলাকায় গোপাল রাজবংশী নামের একজন মাছ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পুলিশ পরিচয়ে ৫৬ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ছিনতাইয়ের ঘটনায় মির্জাপুর থানায় অভিযোগ করলেও তার টাকা উদ্ধার হয়নি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পুলিশের পোশাক গায়ে থাকলে তাকে সন্দেহ করার সাহস হয় না। রাতে মহাসড়কে তারা তল্লাশি চালায়। মামলার ভয় দেখিয়ে সুযোগ বুঝে তারা মানুষের কাছে থাকা টাকা-পয়সা লুট করে নেয়। মহাসড়কের মির্জাপুর অংশের বিভিন্ন পয়েন্টে তারা সময় সুযোগ বুঝে ছিনতাই করে।
তবে ঐ দুই পুলিশ সদস্যকে টাঙ্গাইলে গ্রেপ্তার করায় মানিকগঞ্জের দৌলতপুর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) খলিল তাদের তথ্য জানিয়েছেন।
মির্জাপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম বলেন, তারা দুইজন পুলিশের পোশাক পরিহিত ছিল। ছিনতাইকারীরা কোনো পুলিশ সদস্য না। কেউ পুলিশ সদস্যের মাধ্যমে বা দোকান থেকে পুলিশের পোশাক সংগ্রহ করে মহাসড়কে ছিনতাইয়ের কাজ করে। এই ঘটনায় একজন পিকআপ চালক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি রিসিভ করেননি।
দৈনিক অর্থনীতি