২০২২ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের সাড়ে ১১ মাস পরেও কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি কেন্দ্রীয় যুবলীগ। নগর যুবলীগের সভাপতি পদের জন্য ২৮ জন প্রার্থী এবং সাধারণ সম্পাদকের জন্য ৬৫ জন প্রার্থী তাঁদের জীবনবৃত্তান্ত কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে উপস্থাপন করেন। মূলত ক্লিন ইমেজের প্রার্থীই প্রাধান্য পেতে যাচ্ছে এই কমিটিতে। প্রার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য যাচাই বাচাই শেষে এবং বছরজুড়ে তদবীরের পর ইতোমধ্যে একটা শর্টলিস্টও তৈরি করেছে কেন্দ্র। মূলত সেই শর্টলিস্ট থেকেই আসবে নগর যুবলীগের নেতৃত্বে।
কেন্দ্রীয় যুবলীগের সুত্রে জানা যায়, সবদিক বিবেচনায় এই শর্টলিস্টে
রয়েছেন নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক দিদারুল আলম দিদার, বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি ও নগর যুবলীগের সংগঠক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ পাল দেবু, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম আর আজিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সালাউদ্দিন, ওমর গণি এমইএস কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরশেদুল আলম বাচ্চু।
এছাড়াও আলোচনায় আছেন যুবলীগ নেতা মনোয়ার উল আলম চৌধুরী নোবেল, মোঃ হেলাল উদ্দিন, সুরজিত বড়ুয়া লাভু, একেএম শহীদুল কাওসার, সনৎ বড়ুয়া, ওয়াহিদুল আলম শিমুল, শেখ নছির আহমদ, সুমন দেবনাথ, জাবেদুল আলম সুমন, নুরুল আজিম রনি, ইঞ্জিনিয়ার আবু মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।
এদিকে, ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে আগের কমিটি বিলুপ্ত করে দেওয়ায় চট্টগ্রাম মহানগরে এখন কার্যত যুবলীগের কার্যক্রম নেই বললেই চলে। কমিটি বিলুপ্ত হওয়ায় সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে কিছুটা সমস্যা হয়। তবে পদপ্রত্যাশীরা নানানভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের কার্যক্রম।
চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীসহ বিভিন্ন পদের প্রার্থীদের বিষয়ে ১১টি তথ্য সংগ্রহ করছে কেন্দ্রীয় যুবলীগ। প্রার্থী ব্যক্তিগতভাবে কোন নেতিবাচক কাজে জড়িত আছে কিনা তা যাচাই করার পাশাপাশি তার পরিবারের অন্য কোন সদস্য কিংবা নিকট আত্মীয়ের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিয়েও খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে ব্যক্তিগত এবং পরিবারের সদস্যদেরও রাজনৈতিক তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। যে ১১টি তথ্য চাওয়া হচ্ছে তা হল- পরিবারের সদস্যরা অন্য কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত কিনা? তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। যদি থাকে তা নেতিবাচক দিক হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজিতে সম্পৃক্ত আছে কিনা তার খোঁজও নেয়া হচ্ছে। এমনকি অনৈতিকভাবে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার জনশ্রুতি আছে কিনা সে বিষয়েও তথ্য চাওয়া হচ্ছে। এছাড়া পদ প্রার্থীর পেশা সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ইতোপূর্বে মেয়র, কাউন্সিলর নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করেছে কিনা সেই তথ্যও সংগ্রহ করা হচ্ছে। রাজনৈতিক নেতা হিসেবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব খাটান কিনা তাও জানার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় নীতি-নির্ধারকরা। এছাড়া পদপ্রার্থীর আচার-আচরণ কী রকম। সাধারণ মানুষের সাথে খুব সহজে মিশতে পারেন কিনা সে সম্পর্কিত তথ্যও জানার চেষ্টা হচ্ছে। পূর্বে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন কিনা এবং বর্তমানে মাদক ব্যবসা কিংবা সেবনের সাথে সংশ্লিষ্ট আছে কিনা তাও যাচাই করা হচ্ছে। একইসাথে পদপ্রার্থীর চারিত্রিক দুর্বলতা আছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিকট আত্মীয়ের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা সম্পর্কিত তথ্যও চাওয়া হচ্ছে। পদপ্রার্থীরা গুরুতর কোনো অভিযোগে সম্পৃক্ত কিনা তাও জানতে চায় কেন্দ্রীয় যুবলীগ।
চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের কমিটি ঘোষণার পর পর কয়েকজনের পদত্যাগ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বিব্রত অবস্থায় ফেলেছে। মূলত সে কারণেই মহানগরের কমিটি ঘোষণার ক্ষেত্রে তারা বেশ সতর্কতা অবলম্বন করছে।