বছরের শেষপ্রান্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আর ইংরেজি বর্ষবরণ সামনে রেখে পর্যটকে মুখরিত হতে শুরু করেছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। সাপ্তাহিক বন্ধ আর বড়দিন উত্সবকে ঘিরে টানা তিনদিনের ছুটিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এরই মধ্যে কক্সবাজারে ছুটে এসেছেন অনেক পর্যটক। তবে ভরা মৌসুমে পর্যটকের কাছ থেকে ব্যবসায়ীরা বাড়তি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল সকালে সমুদ্রসৈকতের লাবণী থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত দেড় কিলোমিটারজুড়ে দেখা গিয়েছে পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়। ইটপাথরের শহর থেকে বেরিয়ে উন্মুক্ত পরিবেশে এসে খুব ভালোই সময় কাটাচ্ছেন তারা। তাছাড়া এ সময়ে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করায় সন্তুষ্ট অনেকে। তবে বাড়তি দাম আদায়ের অভিযোগ তুলেছেন কেউ কেউ।
ঢাকার সাভার থেকে আসা পর্যটক নাজমুল হাসান গণমাধ্যমকে জানান, কক্সবাজারের পরিবেশ অনেকটা ভালো। রাস্তাঘাটেরও অনেক পরিবর্তন হয়েছে। সৈকতে হেঁটে বেড়ানোর আনন্দই আলাদা।
সৈকতে সি সেফ লাইফ গার্ডের কর্মী জয়নাল আবেদীন জানান, ছুটিকে কেন্দ্র করে সমুদ্রপাড়ে বেড়েছে মানুষের উপস্থিতি। বাড়তি পর্যটকের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন লাইফগার্ড সদস্যরা। তার পরও নিরাপত্তায় ঘাটতি নেই। সমুদ্রে নামতে গিয়ে যেন কোনো দুর্ঘটনায় পড়তে না হয়, সেজন্য সব পয়েন্টে কঠোর নজরদারি রাখা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ জানান, পর্যটকের সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় মাঠে রয়েছে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। তাদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের সঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, এরই মধ্যে হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউজের সব রুম বুকড। বিশেষ করে গতকাল থেকে আগামীকাল রোববার পর্যন্ত কক্সবাজারের অধিকাংশ হোটেলে রুম খালি নেই। পর্যটকরা রুম পেতে হিমশিম খাচ্ছেন। হোটেল মোটেল মালিক সমিতি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
পর্যটকের ভিড়ে কে কত বেশি টাকা হাতিয়ে নিতে পারেন সে প্রতিযোগিতায় নেমেছে হোটেল
-মোটেলগুলো। হোটেল ভাড়ার কোনো তালিকা না থাকায় সবচেয়ে বেশি প্রতারণার শিকার হচ্ছেন পর্যটকরা। এতে করে কক্সবাজার পর্যটন শিল্পেও বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পর্যটনের এ মৌসুমে বিভিন্ন স্থানে হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত দাম রাখার অভিযোগ রয়েছে। শুধু রেস্তোরাঁ নয়, রিকশা, নৌকা, অটোরিকশা ভাড়া, পর্যটন স্থানের বিভিন্ন দোকানের পণ্যের দামও হাঁকা হচ্ছে বাড়তি।
হোটেল বে মেরিনার ম্যানেজার রফিক উল্লাহ জানান, ১৬ ডিসেম্বরের পর থেকে থার্টি ফাস্ট নাইট পর্যন্ত কোনো রুম খালি থাকছে না। তবে বিভিন্ন কারণে একটু বাড়তি দাম আদায় করা হচ্ছে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান বলেন, ‘পর্যটকের নিরাপত্তায় সবসময় আমাদের সর্বোচ্চ নজরদারি থাকে।’