এক মাসের ছুটি নিয়ে সাড়ে তিনবছর ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চররায়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকা।
২০১৯ সালে একমাসের ছুটি নিয়েছিলেন সহকারী শিক্ষিকা উম্মে হাসিন। সেই ছুটি শেষ হওয়ার পর এখনো পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাননি শিক্ষার্থী ও সহকর্মীরা।
বুধবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উম্মে হাসিন ২০০৯ সালের ১০ মে চররায়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন। এরপর দীর্ঘ ১০ বছর নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। পরে ২০১৯ সালের ১৯ জুন থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত অসুস্থতাজনিত কারণ দেখিয়ে ছুটি নেন। সেই থেকে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হননি উম্মে হাসিন।
এদিকে, ওই শিক্ষিকার কারণে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৪২৬ শিক্ষার্থী ও সাতজন শিক্ষক কর্মরত আছেন।
স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা উম্মে হাসিন এক মাসের ছুটি নিয়ে সাড়ে তিনবছর বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থাকায় আমাদের শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে, ওই পদ এখনো শূন্য দেখানো হয়নি।
চররায়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আমেনা খাতুন গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে সব শিক্ষকরা নিয়মিত এলেও উম্মে হাসিন ম্যাডাম সাড়ে তিন বছর ধরে আসেন না। এতে আমাদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) নারগিস পারভীন গণমাধ্যমকে বলেন, উম্মে হাসিন বিদ্যালয় থেকে ২০১৯ সালে এক মাসের ছুটি নিয়ে চলে গেছেন। তার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। তার ব্যক্তিগত নম্বরও বন্ধ।
তবে বিদ্যালয়ের অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে সহকারী শিক্ষিকা উম্মে হাসিন গণমাধ্যমকে বলেন, আমার ছুটি শেষ হওয়ার পর চাকরি থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু কেন আবেদনটি মঞ্জুর করা হয়নি, আমার জানা নেই। শুনেছি, এটা নিয়ে নাকি তদন্ত হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাইয়ার সুলতানা গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। গত ৭ ডিসেম্বর সরেজমিন গিয়ে তদন্ত কমিটি ওই শিক্ষিকার দীর্ঘদিন অনুপস্থিতির প্রমাণ পেয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনটি এরইমধ্যে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম মণ্ডল জাগো নিউজকে বলেন, ওই শিক্ষিকার অনুপস্থিতির তদন্তের প্রতিবেদনটি হাতে পেয়েছি। তার দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিতির বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।