চট্টগ্রামের মেয়ে পান্না দাশ সুমি (৩০) স্বামীর পরকীয়ার সম্পর্ক জেনে যাওয়ায় স্বামী অনুজ কুমার (৩২) ও তার পরিবার কর্তৃক পরিকল্পিত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
নিহতের পরিবার ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পান্না দাশ সুমির সাথে বিগত ২০২০ সালের ১৩ মার্চ অনুজের বিয়ে হয়। সব ঠিকটাক চলছিল হঠাৎ স্বামীর পরিবর্তন দেখে স্ত্রী পান্না খোঁজ নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারেন তার স্বামী অনুজ অপর এক মহিলার সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। এ নিয়ে তাদের সুখের দাম্পত্য জীবনে নেমে আসে চরম অশান্তি। নিহত পান্না তার স্বামীকে এ অনৈতিক সম্পর্ক হতে বিরত থাকতে বারবার অনুরোধ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে স্বামী অনুজ কুমার পান্নাকে শুরু করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এ নিয়ে নিহত পান্না তার পরিবারকে সব খুলে বলেন এবং স্বামী অনুজের পরিবারের সঙ্গেও তাদের বেশ কয়েক বার এ ঝামেলা সমাধান করার চেষ্টা করেন বলে জানায় তার পরিবার।
এ ঘটনায় গত ১১ ডিসেম্বর ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাশ চন্দ্র অধিকারীর আদালতে হত্যা মামলা করেন নিহতের ছোট ভাই সঞ্জয় দাশ। এতে পান্নার স্বামী অনুজ, তার মা আল্পনা রায় ও বাবা অর্জুন কর্মকারকে আসামি করা হয়েছে।
রাজধানীর বাড্ডা থানার ১৮ নম্বর ছয়তলা ভবনের একটি ফ্ল্যাট থেকে গত ১ ডিসেম্বর সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো পান্নার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ দম্পতির রায়া কর্মকার নামের ১৪ মাস বয়সী এক সন্তান রয়েছে।
অনুজের বাড়ি চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানার অক্সিজেন এলাকার এডুকেশন এমপ্লয়িজ হাউজিং সোসাইটিতে। আর পান্নার বাড়ি নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন দেওয়ান বাজার মাছুয়া ঝর্ণা লেনে।
আরও জানা যায় স্বামী অনুজের কর্মস্থল ‘হেলথ কেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড’ এর মার্কেটিং বিভাগে ঢাকায় হওয়ার কারণে পান্না বসবাস করতো ঢাকায়।
মামলার বাদী সঞ্জয় দাশের অভিযোগ, এক নারীর সঙ্গে অনুজের অনৈতিক সম্পর্ক পান্না জেনে যাওয়ার পর থেকে তাঁর ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার আমরা আমাদের পরিবার বোনের স্বামীর এ অনৈতিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরেছি কিন্তু তার পরিবার আমাদের অভিযোগের কোন সারা না দিয়ে তারা সহ আমার বোনের উপর প্রতিনিয়ত নির্যাতন চালিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় হত্যা করে লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করে অনুজ। এমনকি ময়নাতদন্ত ঠেকাতে তিনি আমার বড় ভাই প্রকাশ দাশকে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন এবং প্রতিনিয়ত আমাকে এবং আমার পরিবারকে হুমকি প্রদান করছে অনুজ তার পরিবার। আমরা বোন হত্যার বিচার পেতে আদালতে মামলা করেছি।