পাবলিক আর পুলিশ যেন কিছুতেই তাদের পিছু ছাড়ছে না। যার কারণে প্রায় জায়গাতেই দেশ জয়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ধরমন্ডল গ্রামের নারীরা চেইন চুরি করতে গিয়ে কখনো পাবলিকের আবার কখনো পুলিশের হাতে ধরা পড়ছেই। কখনো জয়পুরহাটে,কখনো ফেনিতে,ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্বরোডে,সিলেটের বড়লেখায়,যশোহরে,চট্রগ্রামে,রাজশাহী,দিনাজপুর বা দেশের কোন না কোন এক জায়গায়।
সম্প্রতি জেলার নাসিরনগর উপজেলার স্বনামধন্য ধরমন্ডল ইউনিয়নের দেশজয়ী আপন ৩ বোন,সঙ্গে তাদের ১ ফুফাতো বোন আরো রয়েছেন ৩ মাস আগে বিয়ে হওয়া ছোট ভাইয়ের স্ত্রী।তারা হলেন হামিদা বেগম (২৭), রিপন আক্তার (২৮), রোজিনা বেগম (২৫), মর্জিনা বেগম (২৫) ও লিজা আক্তার (২৩)। তারা ৫ সদস্য মিলে হয়েছে ‘নারী চেইন,মোবাইল চোর ও পকেটমার’ দল!
কিছু দিন পূর্বেও নাসিরনগর থানা পুলিশ ধরমন্ডলের মহিলা চোর চক্রের গ্রেপ্তারী পরোয়ানা ভূক্ত কয়েকজন নারীকে ধরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন।
জানা গেছে সম্প্রতি এই দলটিকে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর রেলস্টেশন থেকে আটক করা হয়। পরে আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এস’এম হাবিবুল হাসান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাদের জেল ও দণ্ডসহ জরিমানা করেন।বর্তমানে এই দলের ৫ জনই কারাগারে রয়েছেন।
জানা গেছে ওই নারী পকেটমার দলটি রেলস্টেশন, হাসপাতাল,বিয়ের অনুষ্টান,হিন্দুদের বিভিন্ন পুঁজা মন্ডপ জনবহুল স্থানে গিয়ে কৌশলে মানুষের পকেট কিংবা ব্যাগ থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও দামী দামী মোবাইল ফোন চুরি করে থাকে। তারা হিন্দুদের বিভিন্ন পুঁজা মন্ডপে বা বড় বড় ধর্মীয় অনুষ্টানে যখন যায় তখন তারা শাঁখা সিদুর পরে হিন্দু নারী সেজে যায়,আবার অনেক সময় বোখরা ও মুখোশ পরেও তারা এ কাজ করে থাকে।
এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে বাসায় কাজ করার কথা বলে আগে বাসা ভাড়া নেয়।তারপর শুরু করে তাদের আসল কাজ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ধরমন্ডলের একাদিক ব্যাক্তি জানিয়েছেন ধরমন্ডলে কোন কোন ব্যাক্তির তিন চারটি বৌ রয়েছে।তারা ৪/৫ লক্ষ টাকা নগদ দিয়ে এরূপ চোর মহিলাদের বিয়ে করে থাকে। এরূপ দাম্পতিদের কাজ হল সারাক্ষণ ঘুড়াফেরা করা,জুয়া খেলা আর মাদক সেবন ও বিক্রি করা।তারা জানান একজন বৌ এক,দেড়,দুই মাসের জন্য বাড়ি থেকে চলে যাবে ফেরার সময় ৫/৭ লক্ষ টাকার স্বর্ণের চেইন,মোবাইল নগদ টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরবে।
তারা আরো জানায়, চোর মহিলারা ধরা পড়লে তাদের ছাড়িয়ে আনার জন্যও একদল লোক রয়েছে।চোর মহিলারা দেশের যে কোন জায়গায় ধরা পড়লে ছাড়িয়ে আনার লোকজনের শুরু হয় দৌড় ঝাপ। বিভিন্ন কৌশলে বা আদালতের মাধ্যমে জামিনে ছাড়িয়ে নিয়ে আসাই হল তাদের কাজ। বিনিময়ে তারাও পায় চুরির অর্থের একাংশ। তারা আরো জানায় ধরমন্ডলে এরূপ চোর মহিলার সংখ্যা প্রায় ২৫০ জনেরও উপরে।
এ বিষয় জানতে চাইলে ধরমন্ডল ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সফিকুল ইসলাম বলেন,‘‘তাদের কারনে আমরা কোথাও মুখ দেখাতে পারিনা।’’
Discussion about this post