সীতাকুন্ডের বারবকুন্ড এলাকায় ২৮ জুলাই আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণ মামলার অন্যতম প্রধান ও ১০ মামলার আসামী দেলোয়ার হোসেন কে আটক করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
আজ ২৪শে সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম সীতাকুন্ড থানাধীন দক্ষিণ সোনায়ছড়ি এলাকায় ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর পূর্বে একই মামলার দায়ে মামলা রুজুর ১৩ ঘন্টার মধ্যে মামলার প্রধান আসামী ধর্ষক মোঃ সাদ্দাম হোসেন ও ০৩ নং আসামী মোঃ জাহেদ মোস্তফা জাহেদকে গত ৩০ জুলাই রাতে গ্রেফতার করা হয়
জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানায় হাশেমনগরে দুটি সন্তান নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন ভুক্তভোগী ভিকটিম। ভিকটিমের স্বামী পুলিশ কর্তৃক আটক হয়ে জেল হাজতে থাকার কারনে ভিকটিম তার সন্তানদের নিয়ে তার বাবার বাড়ী সীতাকুন্ড থানাধীন মুরাদপুরে চলে যায়।
গত ২৮শে জুলাই সন্ধ্যায় ভিকটিম সংবাদ পান, কতিপয় দুস্কৃতিকারী তার বাসায় ঢুকে মালামাল বের করে নিয়ে যাচ্ছে। ভিকটিম সংবাদ পেয়ে এসে দেখেন দরজা খোলা এবং মালামাল এলোমেলো অবস্থায় আছে। আসামীরা তার বাসা থেকে আনুমানিক ১,৫০,০০০/- টাকার বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়।
ছিনিয়ে নেয়া মালামাল আনার জন্য ভিকটিম তার ভাগিনা ও ফুফাতো ভাই এর ছেলে সহ ২৮শে জুলাই রাতে বাড়বকুন্ড ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন রাস্তার উপর পৌঁছালে দুস্কৃতিকারীরা ভিকটিম, তার ভাগিনা ও ফুফাতো ভাই এর ছেলেকে মারধর করতে করতে সীতাকুন্ড থানাধীন বাড়বকুন্ড ইউনিয়নস্থ মকবুল রহমান জুট মিল সংলগ্ন রেল লাইনের একটি ঝুপড়ি ঘরে আটক রেখে ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং তার ভাগ্নি ও ফুফাতো ভাইকে লাঠি দ্বারা মারধর করে।
পরবর্তীতে আসামীরা ভিকটিমের ধর্ষনকালীন সময়ের ছবি তাদের মোবাইলে ধারন করে এবং অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার আগে আসামীরা তাদের তিনটি মোবাইল ফোন এবং নগদ ১০,০০০/- টাকা নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে ভিকটিমের বড়ভাই ঘটনাটি জেনে তাকে উদ্ধার করে সীতাকুন্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে সীতাকুন্ড মডেল থানায় ০৪ জন নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ০১ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় মামলা রুজুর পর থেকে মামলার এজাহার নামীয় আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোয়েন্দা নজরধারী অব্যাহত রেখে মামলা রুজুর পর থেকে একটানা অভিযান পরিচালনা করে ১৩ ঘন্টার মধ্যে মামলার প্রধান আসামী ধর্ষক মোঃ সাদ্দাম হোসেন ও ০৩ নং আসামী মোঃ জাহেদ মোস্তফা জাহেদকে গ্রেফতার করে এবং বাকী পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করার লক্ষ্যে র্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রাখে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে, উক্ত গণধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় ২নং ও অন্যতম প্রধান আসামী মোঃ দেলোয়ার হোসেন চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানাধীন দক্ষিণ সোনায়ছড়ি এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল অদ্য ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২খ্রিঃ তারিখ বর্ণিত এলাকায় ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ দেলোয়ার হোসেন (৩৮), পিতা-মৃত রুহুল আমিন, সাং-বাড়বকুন্ড, থানা-সীতাকুন্ড, জেলা-চট্টগ্রাম‘কে আটক করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় ২নং পলাতক আসামী বলে স্বীকার করে।
সিডিএমএস পর্যালোচনা করে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ দেলোয়ার হোসেন এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানায় গনধর্ষণ, ডাকাতি, অস্ত্র, বিস্ফোরক, বিশেষ ক্ষমতা আইন, মারামারি, চুরি ও সরকারী কাজে বাধাদানসহ সর্বমোট ১০টি মামলা পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীর সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
Discussion about this post