পর পর সাতবার জাতীয় রপ্তানী ট্রফি অর্জনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ্ব মোঃ নাছির উদ্দিন আজ বিকেলে ৩টা ২০মিনিটে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)
আলহাজ্ব মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন নিজপ্রচেষ্টায়, পরিশ্রম,সাধনা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে যিনি আজ দেশের পোশাকশিল্পের নামজাদা শিল্পপতি হিসেবে দেশ-বিদেশে ইতোমধ্যে যথেষ্ট যশ-খ্যাতি অর্জন করেছেন, নিজের হাতেগড়া শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে তিলতিল করে এমন এক অনন্যমাত্রায় নিয়ে এসেছেন
নাছির উদ্দিন ১৯৫০ সালের ১৫ ডিসেম্বর সীতাকুণ্ড উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ছলিমপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর পিতা আবদুল জলিল এবং মাতা আমেনা খাতুন। ৪ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ। ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত সাহসী এবং অনুসন্ধিৎসু ছিলেন তিনি। ছাত্রজীবনে লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধূলায় ছিলেন অত্যন্ত পারদর্শী। তিনি ১৯৬৮ সালে লেখাপড়ার পাশাপাশি পারিবারিক ব্যবসার সাথে যুক্ত হন।
নাছির উদ্দিন ১৯৮৩ সালে পদার্পণ করেন পোশাকশিল্পে। যাত্রা শুরু হয় এনজেডএন গার্মেন্টস লিমিটেড দিয়ে। আশির দশকে বাংলাদেশ বহির্বিশ্বের কাছে পরিচিত ছিল দুর্ভিক্ষ এবং বন্যাকবলিত গরীব দেশ হিসেবে। সেসময় অদম্য সাহস নিয়ে নাছির উদ্দিন উন্নত দেশগুলোতে ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপনের প্রচেষ্টায় নিয়োজিত হন। বাংলাদেশকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেন পোশাকশিল্পের এক সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে।
একে একে বাংলাদেশে পাড়ি জমাতে থাকে উন্নতবিশ্বের সকল পোশাক ক্রেতারা। তাঁর এ উদ্যোমে উৎসাহিত হয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় আরো অনেক পোশাক শিল্পপ্রতিষ্ঠান।
এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ১৯৯৪ সালে চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে (CEPZ) প্রতিষ্ঠা করেন ‘প্যাসিফিক জিন্স লিমিটেড’। পোশাকশিল্পের গতানুগতিক ধ্যান ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক এবং উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদন প্রক্রিয়ার প্রবর্তন করেন বাংলাদেশে।
২০০১ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন জিন্স ২০০০ লিমিটেড এবং ২০০৮ সালে শুরু করেন ইউনিভার্সেল জিন্স লিমিটেড নামের রপ্তানিমুখী পোশাক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপে কর্মরত আছে প্রায় ৩৫ হাজার কর্মকর্তা ও কর্মচারী। বিশ্বের প্রায় ২৫টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে প্যাসিফিক জিন্সের পণ্য। বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের সর্বোচ্চ রপ্তানিকারক হিসেবে প্যাসিফিক জিন্স এর পর পর সাতবার জাতীয় রপ্তানী ট্রফি অর্জন করেছে।