বাজারে দ্রব্য মূল্যের স্থিতিশীল রাখতে আগামী অর্থবছরে ১৩ শতাংশ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
আগামী অর্থবছর বরাদ্দ বাড়িয়ে ২১ হাজার ৬২১ কোটি ২০ লাখ টাকা চেয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। চলতি অর্থবছরের বাজেটে তাদের বরাদ্দের পরিমাণ ১৯ হাজার ৮৯৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা। আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ দাবি ও বিভিন্ন কার্যক্রমের তথ্য উল্লেখ করে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে বিভিন্ন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি এবং ওএমএস কার্যক্রমের মাধ্যমে কম দামে মোট ১৪ লাখ ৩০ হাজার টন খাদ্যশস্য বিক্রি করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ লাখ ১৩ হাজার টন চাল এবং ৫ লাখ ১৭ হাজার টন গম। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৯ লাখ ৬০ হাজার ৯৬৪ টন খাদ্যশস্য বিক্রি করা হয়েছে। যার মধ্যে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি এবং ওএমএস কার্যক্রমের আওতায় বিক্রি করা হয়েছে ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৯৫১ টন চাল এবং ৩ লাখ ১ হাজার ১৩ টন গম।
চলতি বছরের চেয়ে ১ লাখ ৮০ হাজার টন অর্থাৎ প্রায় ১৩ শতাংশ বাড়িয়ে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি এবং ওএমএস কার্যক্রমের মাধ্যমে ১৬ লাখ ১০ হাজার টন খাদ্যশস্য বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, এর মধ্যে ১০ লাখ ৬০ হাজার টন চাল এবং ৫ লাখ ৫০ হাজার টন গম বিক্রি করা হবে।
আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি এবং ওএমএস কার্যক্রম প্রায় ১৩ শতাংশ বাড়িয়ে নির্ধারণ করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। যার মাধ্যমে ১৬ লাখ টনেরও বেশি খাদ্যশস্য সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি করা হবে। এছাড়া নতুন অর্থবছরে আমদানি ও অভ্যন্তরীণভাবে ৩৩ লাখ ৪০ হাজার টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা হবে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম বিষয়ে উল্লেখিত চিঠিতে বলা হয়, পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুদ, সংরক্ষণ, খাদ্যের মান পরীক্ষাসহ দেশে সুষ্ঠু খাদ্যনিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করতে কাজ করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। খাদ্য পরিকল্পনা, গবেষণা ও পরিধারণ বিষয়ে বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে খাদ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে চুক্তি সম্পাদন ও যোগাযোগ স্থাপনও করা হয়। এছাড়া নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩-এর আওতায় গৃহীত সব কার্যক্রম বাস্তবায়নেও কাজ করা হয়।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারের গুদামে খাদ্যশস্যের মজুদ রয়েছে ১৯ লাখ ৮৫ হাজার টন। এর মধ্যে চাল ১৭ লাখ ২৪ হাজার টন, গম ২ লাখ ৩০ লাখ টন এবং ধান ৪৭ হাজার টন।
এছাড়াও ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাজধানীর বাজারে মোটা চাল বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪৬ থেকে ৫০ টাকায়। এক মাস আগে যা ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। গতকাল পাইজাম, লতাসহ অন্যান্য মাঝারি মানের চাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৫২ থেকে ৫৬ টাকায়। এক মাস আগে যা ছিল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা। নাজিরশাইল, মিনিকেটসহ অন্যান্য সরু চাল বিক্রি হয়েছে ৬২ থেকে ৭০ টাকায়। এক মাস আগেও যা ছিল ৬০ থেকে ৬৮ টাকা।
Discussion about this post