মানিকগঞ্জের পদ্মাপাড়ে শুষ্ক মৌসুমেও দেখা দিয়েছে ভাঙন। জিও ব্যাগ ফেলেও নদীর পাড়ের ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না।
মানিকগঞ্জের পদ্মা-যমুনা নদীতে শুষ্ক মৌসুমেই ভাঙনে দেখা দেওয়ায় দিশাহারা নদী পাড়ের মানুষ। বসতভিটা, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানসহ পশু-পাখি ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন তারা। পানি উন্নয়ন বোর্ড গত বর্ষা মৌসুমে আপদকালীন ১৫ কোটি টাকার কাজ করলেও তা কোনো কাজে আসে নি। তবে সংস্থাটি বলছে, ৩টি স্থানে ৭টি প্যাকেজের মাধ্যমে ৫০ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে।
গত বছর বর্ষা মৌসুমেই সময় টেলিভিশনে খবর প্রচারের পর মানিকগঞ্জের পদ্মা-যমুনার বাম তীরবর্তী ৩০টি স্থানে ১৫ কোটি টাকার আপদকালীন কাজ করলেও তা কোনো কাজে আসে নি নদী ভাঙনের শিকার মানুষের। ফলে ৩০টি স্থানের ১৮টিতেই শুষ্ক মৌসুমে দেখা দিয়েছে ভাঙন। এতে বসতভিটা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয়রা।
তারা বলেন, এ বছর যেভাবে ভাঙন হচ্ছে। তাতে জিও ব্যাগ ফেলেও রক্ষা হচ্ছে না। জিও ব্যাগসহ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ মৌসুমেই এমন ভাঙন দেখা দিয়েছে। বর্ষায় তো পুরো এলাকাই বিলীন হয়ে যাবে।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড শুষ্ক মৌসুমে হরিরামপুর ও দৌলতপুরের ৩টি স্থানে ৭টি প্যাকেজে ৫০ কোটি টাকার জিও ব্যাগের ডাম্পিয়ের কাজ করলেও তাতে নদী ভাঙনের শিকার মানুষের কোনো কাজে আসবে বলে দাবি ভোক্তভোগীদের। এছাড়াও বসতভিটার রক্ষায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজের মান ও পরিকল্পনা নিয়ে ক্ষুব্ধ নদী ভাঙনের শিকার মানুষ। তারা বলেন, খালি নদীর ভাঙনই দেখছি। ছয় থেকে সাত বার আমার বাড়িঘর ভেঙে গেছে। এখন আমরা জর্জরিত ও আতঙ্কিত হয়ে আছি। আমার ঘর নদীর পাড়ে। ভাঙতে ভাঙতে সবই চলে গেল। আমরা কী করে বাঁচব?
মানিকগঞ্জের পদ্মা-যমুনার হরিরামপুর ও দৌলতপুরের ৩টি স্থানে ৭ লাখ জিও ব্যাগ দিয়ে সাড়ে ৩ কিলোমিটার নদীর বাম তীরে ৫০ কোটি টাকার কাজ করা হচ্ছে। এছাড়াও বর্ষার আগেই একনেকে অনুমতিতে হরিরামপুরে আরও ৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে স্থানীয় ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা।
এবিষয়ে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, এখানে আমাদের ২৫০ কিলো ওজনের জিও বস্তা ফেলা হচ্ছে। আমাদের কাজ শেষ হলে এলাকার মানুষ ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে।
মানিকগঞ্জের দৌলতপুরের বাচামারা, বাঘুটিয়া, চরকাটারী, জিয়নপুর ইউনিয়ন, হরিরামপুরের ধূলশোড়া, গোপীনাথপুর, কালিতলা, আজিমনগর ও শিবালয়ের অন্বয়পুর, আরিচাসহ বেশি কিছু এরাকায় শুষ্ক মৌসুমে পদ্মা-যমুনার ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে দৌলতপুরের বাচামারা ও হরিরামপুরের ধূলশোড়ায় ৫০ কোটি টাকার কাজ চলমান থাকলেও আতঙ্কে রয়েছেন বেশির ভাগ নদী তীরবর্তী মানুষ।
Discussion about this post