বরই চাষ করেই এখন গোলাপ মোল্লা একজন স্বাবলম্বী কৃষক।রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের উদয়পুর গ্রামের সফল বড়ই চাষি গোলাপ মোল্লা। তিনি ২০১০ সালে ১ বিঘা জমিতে শুরু করেন বরই চাষ।
চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূল ও ফলন ভালো হওয়ায় রাজবাড়ীর সদর উপজেলার উদয়পুর এলাকায় বরইয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে।
প্রতি বিঘায় প্রায় একশ’ মণের অধিক ফলন পাচ্ছেন চাষিরা। বরই চাষে বিঘায় খরচ হয়েছে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। আর বিঘা প্রতি বরই বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ টাকার বেশি।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের উদয়পুর গ্রামের সফল বরই চাষি গোলাপ মোল্লা। তিনি ২০১০ সালে ১ বিঘা জমিতে শুরু করেন বরই চাষ।
শুরুতেই গোলাপ মোল্লা আয় করেন ৭৫ হাজার টাকা। এরপর থেকে প্রতি বছরই তিনি বাড়াতে থাকেন বড়ই চাষ। বর্তমানে তিনি ১৫ বিঘা জমিতে কাশমেরি, আপেল কুল, বাউকুল ও নারকেলি কুলের চাষ করছেন।
প্রথমে খরচ একটু বেশি হলেও এখন প্রতিবিঘায় খরচ হচ্ছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা।
এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বড়ই’র ফলন বেশি হওয়ায় খুশি কৃষক গোলাপ মোল্লা। চলতি মৌসুমে যে ফলন হয়েছে তাতে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার বরই বিক্রি করবেন বলে তিনি আশাবাদী।
এছাড়া দিনের পারিশ্রমিক হিসাবে নারীরা বরই ভাঙ্গার কাজ করছে বাগানে। কৃষক গোলাপ মোল্লার বরই চাষে লাভবান দেখে এলাকার অনেকই এখন আগ্রহী হচ্ছে এই চাষে।
বরই চাষি গোলাপ মোল্লা বলেন, ‘কুল (বরই) পাকা শুরু হলে বাগান থেকেই পাইকারি দরে মণ হিসেবে বিক্রি করি। কুল জেলাসহ বিভিন্ন যায়গাতে নেওয়া হচ্ছে। এ বছর ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার কুল বিক্রি করতে পারব।’
এছাড়াও গোলাপ মোল্লা অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। বর্তমানে বাগান পরিচর্যার জন্য ৮ জন কাজ করছেন।
বড়ই চাষে কম সুদে ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান গোলাপ মোল্লা।
বাগানের শ্রমিক রহিমা বেগম, জাফর শেখ ও শুকুর আলী বলেন, ‘গোলাপ মোল্লার এই কুল বাগানে আমাদের কর্মসংস্থান হওয়াতে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমাদের জীবন-জীবিকা ভালোই চলছে।’
অপরদিকে বরই চাষি ইদ্রীস আলী বলেন, ‘১ বিঘা জমিতে আমার কুল চাষে খরচ হয় ২৫ হাজার টাকা। আর বিক্রি করার আশা করছি ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা।’
রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. বাহাউদ্দিন শেখ বলেন, ‘আমাদের মাঠ পর্যায়ে যারা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আছেন তারা কুল চাষে কৃষকদের সব রকম পরামর্শ দিয়ে আসছেন। বেকার যুবকদের কুল চাষে আগ্রহী করতে আমরা কাজ করছি। কুল লাভজনক একটি চাষ।’
কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এ বছর রাজবাড়ী সদর উপজেলাতে ২১ হেক্টর জমিতে কাশমেরি, নারিকেলি, বাউকুল, আপেল কুল, থাইকুল, সিডলেস সহ বিভিন্ন জাতের বরই আবাদ হয়েছে।