সাধারণের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে চাল, ডাল, তেল, আটা, ময়দার দাম। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় টিসিবির ট্রাকের সামনে লম্বা হচ্ছে নিম্নবিত্তের লাইন। তুলনামূলক কম দামে চাল-ডালসহ নিত্যপণ্য কিনতে টিসিবির লাইনে ঝুঁকছেন মধ্যবিত্তরাও। এদিকে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, উৎপাদক থেকে ভোক্তার হাতে পৌঁছানো পর্যন্ত সরবরাহ ব্যবস্থাকে কঠোর নজরদারিতে রাখতে হবে।
বাজারে গেলে মিলবে না সংসার খরচের হিসাব, তাই টিসিবির ট্রাকের পেছনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দীর্ঘলাইন রাজধানী বাসিন্দাদের। সাহস করে যারা বাজারে এসেছেন, তারাও হিসাব মেলাচ্ছেন প্রয়োজনকে কাটছাঁট করে।
নিত্যপণ্যের দামের এ ঊর্ধ্বগতির কারণে সকাল থেকেই রাজধানীতে বিভিন্ন পয়েন্টে টিসিবির গাড়ির কাছে দেখা যায় ক্রেতাদের গাদাগাদি ভিড়। প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য কিনতে এখানে জড়ো হয়েছেন নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। দেশে করোনার প্রকোপ শুরুর পর থেকেই সাধারণ মানুষের আয় কমে গেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকায় তাদের এখন কোণঠাসা অবস্থা। তাই টিসিবির এই কর্মসূচিতে নিম্নবিত্তদের পাশাপাশি মধ্যম আয়ের মানুষের উপস্থিতিও বাড়ছে।
তবে চাহিদার তুলনায় পণ্য কম থাকায় দুপুরের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় বিক্রি। শেষ মুহূর্তে টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে আসা অনেকেই ফিরছেন খালি হাতে। এই কর্মসূচিকে ঘিরে সাধারণ মানুষের রয়েছে নানা অভিযোগ৷
ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম যেভাবে বাড়ছে, সেভাবে তো আমাদের আয় বাড়ছে না। এলাকার বাজারে পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় কারওয়ান বাজারে এসেছি; কিন্তু এখানে এসেও দেখি দাম অনেক বেশি।’
তবে চাহিদার তুলনায় টিসিবির ডিলারদের কাছে পণ্য সরবরাহ কম থাকায় তারা ক্রেতাদের প্রয়োজন মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
এদিকে করোনার মধ্যে দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে থাকায় মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। তবে সরকার দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে–এমনটাই আশা সাধারণ মানুষের।
সরকারি হিসাব বলছে, চাল ,ডাল, তেল আটা, ময়দা, ছোলাসহ প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম বছর ব্যবধানে বেড়েই চলেছে। এতে নাভিশ্বাস অবস্থা সাধারণ মানুষের।
সবজি উৎপাদনে দেশের অবস্থান বিশ্বে তৃতীয় হওয়া সত্ত্বেও ক্রেতাদের নেই কোনো স্বস্তি।
এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে মানুষের আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থায় সার্বক্ষণিক নজরদারির পরামর্শ অর্থনীতিবিদের।
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবু ইউসুফ বলেন, সাধারণ মানুষকে প্রতিদিনই তাদের নিত্যপণ্যের বাজারে গিয়ে যুদ্ধ করতে হয়েছে। তার কিন্তু হিসাব মিলছে না। উৎপাদন থেকে ভোক্তার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত সাপ্লাই চেইনকে বিশ্লেষণ করে দেখা দরকার। এটি কি আসলে স্বাভাবিক দাম কি না?