শৈবাল দিয়ে তৈরি বিভিন্ন পণ্য স্থানীয় বাজারে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি শৈবাল দিয়ে অন্যান্য পণ্যও তৈরি করা হয়েছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদিত এসব পণ্য দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আগামীতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও বিশাল অবদান রাখবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।
শৈবালশিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শৈবালের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধিলাভের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এর বিশাল বাজার আছে। শৈবালের তৈরি পণ্য বিদেশে রপ্তানি এবং দেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয় করতে ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পুষ্টিগুণ বিবেচনায় শৈবালের চাষাবাদ কৌশলও ঠিক করা হয়েছে। এর বিদেশি বাজার ধরতে রপ্তানি আরও বাড়ানো হবে। বর্তমানে বিক্রির জন্য শৈবালের পাঁচটি পণ্য রয়েছে।
সি-উইড বা সামুদ্রিক শৈবাল সাধারণত সাগর বা নদীর তলদেশে (ইন্টার-টাইডাল জোন) জোয়ার-ভাটার মধ্যবর্তী স্থানে জন্মায়। এটি শেকড়, পাতা, ফুল ও ফলবিহীন উদ্ভিদ, যা সালোক সংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং সূর্যালোককে কাজে লাগিয়ে প্রয়োজনীয় জৈব রাসায়নিক পদার্থে রূপান্তর করে অক্সিজেনকে উপজাত হিসেবে উৎপন্ন করে।
প্রকৃতিতে মূলত তিন ধরনের (লাল, বাদামি এবং সবুজ) শৈবাল দেখা যায়। সামুদ্রিক আগাছা হিসেবে পরিচিত হলেও বর্তমান বিশ্বে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জলজ সম্পদ। অধিক পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ হওয়ায় বহুকাল আগে থেকেই সরাসরি সালাদ, মসলা ও সবজি হিসেবে উন্নত দেশে শৈবালের ব্যবহার হয়ে আসছে। এছাড়া ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্য, ওষুধ, আগার, কারাজিনানসহ বিভিন্ন দ্রব্যের উপজাত হিসেবে শৈবালের ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে।
গবেষকরা বলছেন, পুষ্টিগুণ এবং ঔষধি গুণাগুণ বিচারে শৈবাল একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদ। শৈবালজাত পণ্য ব্যবহারে মানুষের শরীরে পুষ্টির ভারসাম্য বজায় থাকে।
শৈবাল পানি ও পরিবেশ থেকে বিভিন্ন খনিজ এবং পুষ্টি সংগ্রহ করে। এতে ফল ও শাকসবজির চেয়ে বেশি ভিটামিন এ, বি-১২, সি, বিটা ক্যারোটিন, ফোলেট, রিবোফ্লাভিন এবং নায়াসিন যোগ হয় শৈবালে। সামুদ্রিক শৈবাল বিশেষত ভিটামিন বি-১২ এর শক্তিশালী উৎস, যা রক্ত এবং স্নায়ু টিস্যুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। থাইরয়েড ফাংশন স্বাভাবিক করতে, স্বাস্থ্যকর হজমক্রিয়া বজায় রাখতে, শরীরের স্থূলতাবিরোধী প্রভাব তৈরি করতে সহায়তা করে শৈবাল।