এই বছরের মধ্যে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষ করে আগামী বছরের শুরুতে যেন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পারেন সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে যোগাযোগ মাস্টারপ্ল্যান করা হবে চট্টগ্রাম ও আশপাশের এলাকার জন্য। প্রধানমন্ত্রী দুই-আড়াই বছর আগে যোগাযোগমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছেন এটা করার জন্য। চট্টগ্রামে মেট্রোরেলের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী আরো দুটি বিষয় উল্লেখ করেছেন। সেগুলো হলো কর্ণফুলী টানেল থেকে রেলস্টেশন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কথাও বলেছিলেন। আরেকটি কথা বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরকে রাখার জন্য। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম মহানগরীর পরিবহন মাস্টার প্ল্যানসহ মেট্রোরেলের সমীক্ষার জন্য প্রিলিমিনারি সার্ভে কাজ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা ও প্রেস ব্রিফিংয়ে তথ্য ও সমপ্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন।
তিনি আরো জানান, টানেলের ওপারে কীভাবে মেট্রোরেলকে নিয়ে যাওয়া যায়। বঙ্গবন্ধু টানেল থেকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত মেট্রোরেল যেতে পারে। যেহেতু সেখানে শাটল চলাচল করে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর পর্যন্ত কীভাবে মেট্রোরেল নিয়ে যাওয়া যায় এসব বিষয় মাথায় রেখেই পরিকল্পনা করা উচিত। ৫টি সংস্থার সাথে আলাদা বসবে কোইকা (কোরীয় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা)। আমাদের সাথেও পরে বসবে। ইঞ্জিনিয়ারিং প্ল্যান তারা করবে। এক বছরের মধ্যে ফিজিবিলিটি স্টাডি করে যাতে দ্রুত এক বছর পর প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে অনুদান নিয়ে এগিয়ে আসায় দক্ষিণ কোরিয়া সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
তিনি বলেন,ব্রিটিশ আমল থেকে কোলকাতার পর চট্টগ্রামই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর। সারা দেশে ১০০টি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজ চলছে। দেশ শিল্পোন্নত দেশে পরিণত হচ্ছে। শিল্প খাতে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। চট্টগ্রাম শহর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। বর্তমানে চট্টগ্রাম শহরের মেট্রোপলিটন এরিয়ায় এক কোটির কাছাকাছি লোক বাস করে। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৭০ লাখ মানুষ বসবাস করে। সেই হিসাবে ২০৩১ সাল নাগাদ শহরে লোকসংখ্যা দ্বিগুণ হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেছেন আগামী ১০ বছরে এ সংখ্যা আরো দ্বিগুণ হতে পারে। কর্ণফুলীর ওপারে শিল্পায়ন হচ্ছে। এছাড়া মীরসরাই শিল্পনগরে ১৫ লাখ শ্রমিক কাজ করবে। সব মিলে মীরসরাই শিল্পনগরে ৩০ লাখ মানুষ বসবাস করবে। চট্টগ্রাম বন্দরের দ্বিগুণ সক্ষমতা নিয়ে বে টার্মিনাল হচ্ছে। এটি একটা রিজিওনাল বন্দর হবে। এর পাশাপাশি মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর হচ্ছে। সব মিলিয়ে যে কর্মকাণ্ড চলছে তাতে চট্টগ্রামের নগরায়ন আগামী ১০ বছর অনেক দ্রুত হবে। চট্টগ্রাম বন্দরের দৈর্ঘ্য আরো বাড়ানো হবে। এর সক্ষমতাও বাড়ানোও হবে। সেটি মাথায় রেখেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যৎ দেখতে পান। সে কারণে তিনি দেশের উন্নয়নের স্বার্থে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন।
গণপরিবহনের সাথে পণ্য পরিবহন নিয়েও ভাবতে হবে। মেট্রোরেল হবার পর নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনাকারী সংস্থার সক্ষমতা এখন থেকে গড়ে তুলতে হবে। নির্মাণ কঠিন নয়, স্মুদলি অপারেট না হলে জনগণ সুফল পাবে না।
সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, মেট্রোরেল ও গণপরিবহন ব্যবস্থাপনায় সমন্বয় জরুরি। মেয়র থাকাকালে আমার তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। সব সংস্থা সরকারি আইনে পরিচালিত। কিন্তু সংস্থা প্রধানদের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি কাজ করে।