রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রটি সূচনা লগ্ন থেকে কৃষিজ বিভিন্ন জাত উদ্ভাবন করে থাকে। এবার বিচিবিহীন পেয়ারার নতুন জাত উদ্ভাবন করে সফলতা অর্জন করেছে দীর্ঘ সাত বছরের গবেষণায়।
উদ্ভাবিত নতুন জাতের এ পেয়ারার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বারি পেয়ারা-৪’। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন,নতুন এ জাতের পেয়ারার চাষ সম্প্রসারণ করা গেলে পেয়ারা চাষে বিপ্লব আসবে বলে।
রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র সূত্র জানা গেছে, উদ্ভাবিত বারি পেয়ারা-৪ উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুর ফল। সব রকমের মাটিতে এ পেয়ারা চাষ করা যায়। তবে জৈব পর্দাথ সমৃদ্ধ দো-আঁশ থেকে ভারী এঁটেল মাটি, যেখানে পানি নিষ্কাশনের বিশেষ সুবিধা রয়েছে, সেখানে এ পেয়ারা ভালো জন্মে। ফলটির আকার ৭ থেকে ১০ সেন্টিমিটার মতো হয়ে থাকে। গড় ওজন দেড় থেকে আড়াইশ’ গ্রাম পর্যন্ত হয়। এতে টিএসএস শতকরা ৯ দশমিক ৫ ভাগ। ফলটি ৮ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সাধারণ তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যায়। প্রতি হেক্টর জমিতে এ পেয়ারার ৩২ টন ফলন হবে।
আরও জানা গেছে, এ জাতের পেয়ারায় রোগবালাইয়ের আক্রমণ তেমন দেখা যায়নি। তবে মাঝেমধ্যে ছাতরা পোকার আক্রমণ দেখা যায়। আক্রমণের প্রথম অবস্থায় আক্রান্ত পাতা ও ডগা ছাঁটাই করলেই রোগ দমন করা যায়।
এ বিষয়ে রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক তপন কুমার পাল বলেন, আমরা কৃষি সম্প্রসারণে কাজ করি। রাইখালি গবেষণা কেন্দ্রের নতুন জাতের বারি-৪ বা বিচিবিহীন পেয়ারার জাতটির বিভিন্ন হর্টিকালচার সেন্টার মাতৃ গাছের বাগান সৃষ্টি করছে। আগামী ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে চারা করা সম্ভব হবে। তখন আমরা কৃষক পর্যায়ে এ চারা বিতরণ শুরু করব। এর ফলে মানুষের মধ্যে পেয়ারা সম্পর্কে ধরণাই বদলে যাবে।
তিনি বলেন, আমি নিজে খেয়ে দেখেছি, পেয়ারাটি না দেখলে কেউ বলতে পারবে না তিনি কি নাশপাতি খাচ্ছেন না কি পেয়ারা খাচ্ছেন। আমি বিশ্বাস করি, এ ফলটির ব্যাপক চাহিদা থাকবে। বিশেষ করে বিচিমুক্ত ও উন্নত স্বাদের কারণে এর প্রচুর চাহিদা থাকবে। ফলে কৃষকরা ব্যাপক ভাবে লাভবান হবেন।