ভারতের চা শিল্প বিদায়ী বছরে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে ছিল। খাতসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন,বছর শেষে উৎপাদন ৪ কোটি থেকে ৪ কোটি ৫০ লাখ কেজি কমেছে। ভারতীয় চা বোর্ড বলছেন,চলতি বছরও দেশটির চা শিল্প নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে।
বোর্ডের তথ্যানুযায়ী,ভারত ১৩৯ কোটি ৮০ হাজার কেজি চা উৎপাদন করে ২০১৯ সালে অর্থাৎ করোনা মহামারী দেখা দেয়ার আগে। এর মধ্যে আসাম ও পশ্চিমবঙ্গসহ উত্তর ভারতের চা বাগানগুলো থেকেই উৎপাদন হয় ১১৭ কোটি ১০ লাখ ৯০ হাজার কেজি। এটি ওই বছরের মোট উৎপাদনের ৮৪ শতাংশ। বাকি ২১ কোটি ৮৯ লাখ ৯০ হাজার কেজি এসেছে দক্ষিণ ভারতের বাগানগুলো থেকে।
চা শিল্পে বিপর্যয় নেমে আসে ২০২০ সালে করোনা মহামারীর ধাক্কায় ভারতের।মনে আশার সঞ্চার ঘটে গত বছরের শুরুতে পরিস্থিতি ইতিবাচক দিকে মোড় নিলে চা বাগান মালিক-শ্রমিক ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের। কিন্তু পরিস্থিতি আবারো নাজুক হয়ে ওঠে এর মধ্যেই কভিড-১৯ ভাইরাসের নতুন ধরন ডেল্টার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে।ফলে গত বছরকে চা শিল্পের জন্য হতাশার বছর হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে অবিশ্বাস্য রকম বেড়েছে ভারতে সস্তা চা আমদানি অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায়। ভারতে সস্তা চা আমদানি অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায়। এর প্রভাব পড়ছে স্থানীয় চায়ের বাজারে। উৎপাদন ও পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাজারে চায়ের দাম বেশি। ফলে প্রক্রিয়াকরণ প্রতিষ্ঠানগুলো দেশীয় চায়ের পরিবর্তে বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক কম দামে বিপুল পরিমাণ চা আমদানি করে। এসব চা প্রক্রিয়াজাত করে পুনরায় রফতানি করা হয়।
ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের (আইটিএ) সেক্রেটারি সুজিত পাত্র বলেন, গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত চা উৎপাদন মহামারীপূর্ব অবস্থার তুলনায় ৩ কোটি ৯০ লাখ কেজি কমেছে। একই সময় পর্যন্ত উত্তর ভারতে উৎপাদন ৬ কোটি ৫০ লাখ ও দক্ষিণ ভারতে ২ কোটি ৫০ লাখ কেজি কমেছে।আরো জানান, চা রফতানিতে বিশ্ববাজারে ভারতের বড় হিস্যা রয়েছে। বিদায়ী বছর পানীয় পণ্যটির রফতানি সর্বকালের সর্বনিম্নে নেমেছে। মূলত অতিরিক্ত জাহাজ ভাড়া, ইরানের সঙ্গে মূল্য পরিশোধসংক্রান্ত জটিলতার অবসান না হওয়া, কনটেইনার স্বল্পতাসহ নানা প্রতিবন্ধকতা রফতানিতে বিঘ্ন ঘটিয়েছে। এসব প্রতিবন্ধকতার কারণে পণ্যটির দাম আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে।