মোবাইল ব্যাংকিংয়ের আওতায় সরকারি নানা বিল প্রদান, পরিবার-পরিজনকে টাকা পাঠানো, কেনাকাটা, বেতন-ভাতা, মোবাইল রিচার্জ বাবদ লেনদেন করছেন গ্রাহকরা।
মানুষের মধ্যে বাড়ছে ডিজিটাল লেনদেনে আগ্রহ। বিশ্লেষকদের মতে, অর্থনীতিতে ডিজিটাল লেনদেন যত বাড়বে, অপরাধলব্ধ অর্থের ব্যবহার তত কমে আসবে। এর ফলে অবৈধ অর্থ উপার্জনের প্রবণতাও কমবে। আর ডিজিটাল লেনদেন হলে সহজেই ধরা পড়বে অবৈধ লেনদেন।
গত অক্টোবরের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ৪৩ শতাংশই এখন ডিজিটাল লেনদেন। আর প্রায় ৫৭ শতাংশ লেনদেন হচ্ছে নগদ অর্থ জমা ও উত্তোলনে। ২০১৯ সালের একই সময়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাত্র ৩০ শতাংশ ছিল ডিজিটাল লেনদেন। আর ৭০ শতাংশ লেনদেন হতো নগদ অর্থ জমা ও উত্তোলনে। সেই হিসাবে, দুই বছরের ব্যবধানে ডিজিটাল লেনদেন বাড়ছে, তার বিপরীতে কমেছে নগদ অর্থ জমা ও উত্তোলন।
বাংলাদেশে মোবাইলের মাধ্যমে আর্থিক সেবার যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের মার্চে। বর্তমানে ১৩টি ব্যাংক এই সেবা দিচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ১৩ টি মোবাইল ব্যাংকিং (এমএফএস) সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের তথ্য নিয়ে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা গেছে, গত বছরের অক্টোবরে এই সেবায় লেনদেন হয়েছে ৬৭ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। মোট লেনদেনের মধ্যে টাকা জমা হয়েছিল ২১ হাজার ৪৯ কোটি ও উত্তোলিত হয়েছিল ১৭ হাজার ৬৮১ কোটি। মোট লেনদেনে ৫৭ শতাংশ ছিল নগদ জমা ও উত্তোলন। বাকি ৪৩ শতাংশ লেনদেন হয়েছে ডিজিটাল মাধ্যমে।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা জমা করতে এজেন্ট পর্যন্ত পৌঁছাতে হচ্ছে না। ব্যাংক বা কার্ড থেকে টাকা আনা যাচ্ছে এসব হিসাবে। আবার এসব হিসাব থেকে ব্যাংকেও টাকা জমা করা যাচ্ছে, ক্রেডিট কার্ড বা সঞ্চয়ী আমানতের কিস্তিও জমা দেওয়া যাচ্ছে।
গ্রাহকেরা এখন ঘরে বসেই ডিজিটাল কেওয়াইসি (গ্রাহকসম্পর্কিত তথ্য) ফরম পূরণ করে এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে হিসাব খুলতে পারছেন। ফলে গ্রাহক হওয়ার জন্য প্রয়োজন হচ্ছে না বাড়তি ঝামেলার।
এ দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত অক্টোবরে এক গ্রাহক থেকে অন্য গ্রাহকে ১৯ হাজার ৭১০ কোটি টাকা স্থানান্তর হয়েছে, কেনাকাটা হয়েছে ২ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা, সরকারি ভাতা বিতরণ হয়েছে ৪৪ কোটি টাকার, বেতন প্রদান করা হয়েছে ২ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা ও মোবাইল রিচার্জ হয়েছে ৬৬৬ কোটি টাকা।
গ্রাহকেরা এখন ঘরে বসেই ডিজিটাল কেওয়াইসি (গ্রাহকসম্পর্কিত তথ্য) ফরম পূরণ করে এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে হিসাব খুলতে পারছেন। ফলে গ্রাহক হওয়ার জন্য প্রয়োজন হচ্ছে না বাড়তি ঝামেলার।