গাড়ি চুরি করার পর মালিকে ফোন দিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন চোর। চুরি করা গাড়িটি ছিলো পিকআপ ভ্যান। রাজধানীর ডেমরায় অভিযান চালিয়ে পিকআপ ভ্যান চোরচক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, চক্রটি ৩০০ গাড়ি চুরির কথা স্বীকার করেছে।
গত ২৭ অক্টোবর গভীর রাত। রাজধানীর মাতুয়াইল এলাকার একটি সড়কে রিকশায় ঘুরছেন তিনজন। রিকশা থামিয়ে তাদের একজন সড়কে পার্ক করা পিকআপ ভ্যানটির দিকে এগিয়ে আসে। প্রথমে গাড়িটির দরজা খোলেন। পরে এদিক-সেদিক পর্যবেক্ষণ। দ্বিতীয় দফায় আবারও দরজা খুলে এবার দ্রুত পিকআপটি নিয়ে চম্পট। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পার্ক করা পিকআপ ভ্যান এভাবেই চুরি করে চক্রটি।
যাত্রাবাড়ী, ডেমরা ও শ্যামপুরের কয়েকজন বাসিন্দা যাদের পিকআপ ভ্যানে আছে। এদের কারও একটি, কারও দুটি এমনকি তিনটি পিকআপ চুরি হয়েছে। তবে চুরির বিষয়টি তারা প্রথমে জানতে পেরেছেন খোদ চোরদের কাছে থেকেই। সবার অভিজ্ঞতা কমবেশি একই রকম।
পিকআপ ভ্যান মালিক বলেন, চুরির পর চোর নিজেই রাত সাড়ে ৩টা দিয়ে ফোন দিয়ে আমাকে বলে, এ দাদু তুমি এখনো ঘুমিয়ে আছো, তোমার গাড়ি নিয়ে চলে এসেছি, তোমার গাড়ি চুরি হয়েছে। তারপর এ কথা শুনে ঘরের বের হয়ে দেখি আমার বাড়ির গেট ওপার থেকে রশি দিয়ে বাঁধা। এরপর বটি দিয়ে রশি টেকে বাইরে এসে দেখি আমার গাড়ি নেই।
আরেকজন জানান, একই কায়দায় চুরি করে আমাকে ফোন দিয়ে এক লাখ টাকা চায় এ চোরচক্র।
রাজধানী দাপিয়ে বেড়ানো এ চোর চক্রটির ৫ সদস্য এখন গোয়েন্দা হেফাজতে। এদের সবার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক চুরি ও মাদক মামলা।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের উপকমিশনার (ওয়ারি বিভাগ) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, সে নিজেই স্বীকার করেছে তার চক্রের মাধ্যমে ২০০ গাড়ি চুরি করেছে। সব সময় গ্যারেজ থেকেও যে তারা চুরি করে তা নয় রাস্তা থেকেও চুরি ঘটনা ঘটেছে।
পেশাদার এ পিকআপ চোর চক্রটির সদস্য সংখ্যা ১০ জন। আজিজুল শেখ ওরফে রাজু চক্রের প্রধান। সে একসময় নিজেই ছিল পিকআপ চালক। গত কয়েক বছরে তার দল শুধু রাজধানী থেকেই প্রায় তিনশ’ পিকআপ চুরির কথা স্বীকার করেছে।
চোরাই ৫টি পিকআপ উদ্ধারের পাশাপশি তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বেশকিছু মাস্টার চাবি, যা দিয়ে তারা যে কোনো গাড়ি চালু করার সক্ষমতা রাখে। চোর চক্রটির বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।