দৈনিক অর্থনীতি
Advertisement
  • প্রচ্ছদ
  • বাংলাদেশ অর্থনীতি
  • আন্তর্জাতিক অর্থনীতি
  • অর্থনীতি সমাচার
  • মহানগর
  • অপরাধ
  • উপজেলা
  • শেয়ার বাজর
  • অর্থ কথা
  • মুদ্রা বাজার
  • বন্দর ও শিল্পনীতি
  • হাটবাজার অর্থনীতি
  • কর্পোরেট আইকন
  • আমদানি রপ্তানি
  • ফিউচার অর্থনীতি
  • ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প নীতি
  • দুর্নীতি
    • সারাদেশে দুর্নীতি
  • বাণিজ্য
  • ব্যংকিং অর্থনীতি
  • বিবিধ
    • জেলা উপজেলার অর্থনীতি
    • চাকরি
    • দেশ বিদেশ অর্থনীতি
    • শীর্ষ অর্থনীতি
    • শ্রমিক অর্থনীতি
    • জাতীয় অর্থনীতি
    • স্বাস্থ্য খাত
    • শিক্ষাখাত
    • খেলাধুলা
    • টেলিকম ও প্রযুক্তি
    • সারাদেশ
  • ভিডিও
  • প্রচ্ছদ
  • বাংলাদেশ অর্থনীতি
  • আন্তর্জাতিক অর্থনীতি
  • অর্থনীতি সমাচার
  • মহানগর
  • অপরাধ
  • উপজেলা
  • শেয়ার বাজর
  • অর্থ কথা
  • মুদ্রা বাজার
  • বন্দর ও শিল্পনীতি
  • হাটবাজার অর্থনীতি
  • কর্পোরেট আইকন
  • আমদানি রপ্তানি
  • ফিউচার অর্থনীতি
  • ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প নীতি
  • দুর্নীতি
    • সারাদেশে দুর্নীতি
  • বাণিজ্য
  • ব্যংকিং অর্থনীতি
  • বিবিধ
    • জেলা উপজেলার অর্থনীতি
    • চাকরি
    • দেশ বিদেশ অর্থনীতি
    • শীর্ষ অর্থনীতি
    • শ্রমিক অর্থনীতি
    • জাতীয় অর্থনীতি
    • স্বাস্থ্য খাত
    • শিক্ষাখাত
    • খেলাধুলা
    • টেলিকম ও প্রযুক্তি
    • সারাদেশ
  • ভিডিও
No Result
View All Result
দৈনিক অর্থনীতি
No Result
View All Result
Home অর্থনীতি সমাচার

ইস্পাতশিল্পের গুরু আকবর আলীর ১৩ হাজার কোটি টাকার BSRM গ্রুপ প্রতিষ্ঠার গল্প

দৈনিক অর্থনীতি ডেস্ক

September 5, 2021
0 0
0
ইস্পাতশিল্পের গুরু আকবর আলীর ১৩ হাজার কোটি টাকার BSRM গ্রুপ প্রতিষ্ঠার গল্প

আলী হোসাইন আকবরআলী । চেয়ারম্যান বি.এস.আর.এম গ্রুপ ছবিঃ দৈনিক অর্থনীতি.কম

অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি এখন ব্যক্তি খাতনির্ভর। অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগের গুরুত্বই সবচেয়ে বেশি। আলীহোসাইন আকবরআলী। তাঁকে বলা হয় বাংলাদেশের ইস্পাতশিল্পের গুরু। বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলের (বিএসআরএম) চেয়ারম্যান। এ দেশের লৌহ ও ইস্পাতশিল্পের যুগান্তকারী সব পরিবর্তনই এসেছে তাঁর হাত ধরেই। তিনি শুনিয়েছেন তাঁর জীবনের গল্প, বলেছেন সাফল্যের পেছনের কথা।

সবে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি শেষ করেছেন। হাতে ছিল সৌদি আরবের সরকারি তেল কোম্পানি আরামকোতে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রস্তাব। পরিবারের ব্যবসা তখন ইস্পাত খাতে। ব্যবসা না চাকরি, কোনটাতে থিতু হবেন-এই চিন্তায় শেষমেশ পরামর্শ চাইলেন বাবার কাছে। বাবা জীবনের চাবি তুলে দিলেন তার হাতে, ‘তুমি জীবনের যে কোনো সময় চাইলে অ্যাকাউনট্যান্ট হতে পারবে, তবে ব্যবসায় থাকলে যে অভিজ্ঞতা হবে, তা জীবনে কখনো অর্জন করতে পারবে না।’

বাবার এই কথায় ১৯৭২ সালে মাসিক ২৫ হাজার রুপির চাকরির প্রস্তাব ফেলে আলীহোসাইন আকবরআলী যোগ দিয়েছিলেন পারিবারিক ব্যবসায়। শুধু যোগই দেননি, নিজের অক্লান্ত শ্রমে বাবা-চাচাদের হাতে গড়া ইস্পাত কারখানাকে নিয়ে গেছেন নতুন উচ্চতায়। হিসাববিদ্যায় পড়াশোনা করেও এ দেশের প্রকৌশল খাতের প্রতিষ্ঠান ইস্পাতশিল্পের গুরু হিসেবে সুনাম অর্জন করেছেন।

 

বাংলাদেশে এখন এমন কোনো বড় ধরনের প্রকল্প নেই যেখানে বিএসআরএমের রড ব্যবহার হচ্ছে না। পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, উড়ালসড়ক, কর্ণফুলী টানেলের মতো বড় প্রকল্পে ব্যবহার হচ্ছে বিএসআরএমের রড।
এ দেশের লৌহ ও ইস্পাতশিল্পের যুগান্তকারী সব পরিবর্তনই এসেছে আলীহোসাইন আকবরআলীর হাত ধরে।

১৯৮৪ সালে উচ্চশক্তির ‘কোল্ড-টুইস্ট স্টিল রড’ দিয়ে ইস্পাতশিল্পে পণ্যের বৈচিত্র্য শুরু হয় তাঁর হাত ধরে। এরপর ৬০ গ্রেডের রড জনপ্রিয় করেন। আর ২০০৮ সাল থেকে তো ইস্পাত খাতে একের পর এক উচ্চশক্তির রড তৈরিতে যেন বিপ্লব ঘটিয়েছেন। তাঁর দেখানো পথ ধরে অন্যরা উচ্চশক্তির রড বাজারজাত করেছে। ইস্পাতশিল্পের ইতিহাস ও বিকাশ দুটোতেই বারবার ওঠে এসেছে তাঁর নাম।

এ দেশে ইস্পাতের ইতিহাস শুরু হয়েছে আজ থেকে ৬৮ বছর আগে, ১৯৫২ সালে। চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ শিল্প এলাকার কারখানায় আজকের বিএসআরএম গ্রুপের যাত্রা শুরুর সময়টাও একই। এই খাতে প্রথমে নেতৃত্ব দেন তাঁর বাবা আকবরআলী আফ্রিকাওয়ালা। এরপর হাল ধরেন তিনি। এই সোনালি সময়টাও প্রায় ৪৩ বছরের।

আলীহোসাইন আকবরআলীর সাফল্যের গল্প শুনতে যাই সদরঘাটে আলী ম্যানশনে বিএসআরএম গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে। তবে নিজের সাফল্যের গল্পে প্রচার চান না তিনি। ঘুরেফিরে পূর্বপুরুষ ও পরিবারের কথা, কর্মীদের কথা, দেশের উন্নয়নে ইস্পাতশিল্পের গুরুত্বের কথাই বেশি বললেন।

বারবার প্রশ্ন করে তাঁর সাফল্যের নেপথ্যের গল্প উদ্ধার করতে হয়েছে।

শুরুতে গল্পে গল্পে তিনি নিয়ে গেলেন গত শতাব্দীর তৃতীয় দশকে। ভারতের গুজরাটে। সেখান থেকে কখনো আফ্রিকার দেশ মাদাগাস্কার; কখনো পাকিস্তান, কেনিয়া; কখনো-বা হংকং। তবে মূল কেন্দ্রে রেখেছেন চট্টগ্রামকে, যেখানে সাফল্যের বীজ বপন করেছিলেন তাঁর বাবা ও চাচারা।

গুজরাট থেকে চট্টগ্রামঃ 

আলীহোসাইনের পরিবারের পূর্বপুরুষেরা ছিলেন ভারতের গুজরাটের আম্রেলি জেলায়। গুজরাট প্রাচীনকাল থেকে ব্যবসা-বাণিজ্যের শহর। ব্যবসার প্রয়োজনে গুজরাটিরা সুরাট বন্দর দিয়েই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছেন নানা সময়। মহামন্দার সময় সুরাট বন্দর দিয়ে জাহাজে চেপে গুজরাটের বহু বণিক ছড়িয়ে পড়েন কেনিয়া, উগান্ডা, মাদাগাস্কারে মতো দেশে। এই দলে ছিলেন দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের আলীহোসেইনের দাদা আলীভাই খানভাই। ১৯২৯ সালে আফ্রিকার দেশ মাদাগাস্কারে গিয়ে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন। বছর পাঁচেক পর আবার ফিরে আসেন গুজরাটে। চলতে থাকে ব্যবসা।

দেশভাগের সময় আলীহোসাইনের বাবা ব্যবসার কাজে ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানে। এবার নতুন ব্যবসায় হাতেখড়ি। আলীহোসাইন আকবরআলী জানালেন, ‘ঢাকার বেঙ্গল স্টিল থেকে বিমানে স্ক্রু নিয়ে করাচিতে বিক্রি করতেন বাবা। ১৯৫০ সালে তিনি বেড়াতে এলেন চট্টগ্রামে। এখানকার লৌহসমৃদ্ধ পানির স্বাদ ভালো লাগল তাঁর। চট্টগ্রামে জুবিলি রোডে বাসা ভাড়া নিয়ে হার্ডওয়্যারের ব্যবসা সম্প্রসারণ করলেন। বাণিজ্য থেকে লাভ হলো অনেক। লাভের টাকায় শিল্প গড়ার দিকে মনোযোগ দিলেন। যে লোহার পেরেকের বাণিজ্য করেছেন, তা-ই উৎপাদনের কারখানা দিলেন।

বিএসআরএমের শুরুর গল্পঃ
দেশভাগের সময় পূর্ব পাকিস্তানে রড তৈরির কোনো কারখানা ছিল না। এ সময় বাংলার ১৮টি কারখানাই পড়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। তখনই চট্টগ্রামে ইস্পাতের মতো মাতৃশিল্প নির্মাণের পরিকল্পনা মাথায় আসে তাঁর বাবার। তাঁর চাচা তাহেরালী     আফ্রিকাওয়ালা গেলেন কলকাতায়। কারখানা নির্মাণের জন্য কলকাতা থেকে একজন দক্ষ কারিগর আনা হলো। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আনা হলো দক্ষ শ্রমিক। ১৯৫২ সালে নাসিরাবাদে নির্মাণ হলো রড তৈরির কারখানা ‘ইস্ট বেঙ্গল রি-রোলিং মিলস’। ইস্পাত শিল্পের ইতিহাসও শুরু হলো।
ষাটের দশকে (১৯৫২-৫৯) চারটি কারখানা তাঁদের পরিবারের হাতে আসে। রাশিয়ান লেখক এস এস বারানভ ‘পূর্ববাংলা: অর্থনৈতিক উন্নয়নের বৈশিষ্ট্য’ গ্রন্থে দেখিয়েছেন, ষাটের দশকের শেষদিকে সম্প্রদায়ভিত্তিক যে বৃহৎ শিল্পপতি পরিবার ছিল, আকবরআলী আফ্রিকাওয়ালা পরিবার তাদের অন্যতম।

চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠাঃ ইস্পাত কারখানা চালুর তিন বছর আগে ভারতের গুজরাটের আম্রেলি জেলায় জন্ম হয় আলীহোসাইন আকবরআলীর। গুজরাটে জন্ম হলেও স্কুল-কলেজের পড়াশোনা চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় সেন্ট প্লাসিডস স্কুল থেকে ১৯৬৬ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। আগ্রাবাদের সরকারি কমার্স কলেজে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেন।উচ্চমাধ্যমিকে কুমিল্লা বোর্ডে মেধাতালিকায় নবম স্থান অধিকার করেন তিনি।
এরপর পাকিস্তানের করাচি চলে যান। সেখানে এসএম কলেজে সন্ধ্যাকালীন বিকম কোর্সে ভর্তি হন। আর দিনে করাচিতে এএফ ফারগুসানে চার্টার্ড অ্যাকাউনটেন্সি (সিএ) কোর্স করেন। ১৯৭২ সালেই কোর্স শেষ করেন। আকবরআলী আফ্রিকাওয়ালার তিন সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে ছোট তিনি।

নতুন করে শুরুঃ  উচ্চ বেতনের চাকরির প্রস্তাব পেয়েও গেলেন না সৌদি আরবে। বাবার অনুপ্রেরণায় করাচিতে চাচার সঙ্গে ইস্পাত পণ্যের ব্যবসায় যুক্ত হন। অভিজ্ঞতা অর্জনের পর ১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম ফিরে বিএসআরএম কারখানায় যোগ দেন।

আলীহোসাইন আকবরআলী বলেন, ‘বাবা সব সময় বলতেন, বিশ্বের যেকোনো দেশে যেতে পারো, কিন্তু চট্টগ্রামের মতো শান্তি বিশ্বের কোথাও পাবে না। এখানে সংস্কৃতির সমস্যা নেই। লোকজন ভদ্র। ধার্মিক। সবচেয়ে বড় কথা, এখানে বিনিয়োগের জন্য সবই আছে।’

কারখানায় যোগ দিয়ে তিনি দেখলেন, ইস্পাত খাতে বিনিয়োগের জন্য বন্দর সুবিধা, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি-সবই আছে চট্টগ্রামে। শুরু হলো বাবার সঙ্গে কারখানায় অভিজ্ঞতা নেওয়ার পালা। খুব দ্রুত দক্ষতা অর্জন করেন তিনি। ১৯৮৫ সালের মধ্যে পুরো দায়িত্বভার তাঁর হাতে তুলে দেন বাবা। তবু বাবাকে চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে রেখেই ইস্পাতশিল্পের মান উন্নয়নে নজর দেন।

 

যেভাবে সাফল্যঃ 

নব্বই দশক ছিল ইস্পাতশিল্পের জোয়ার। লাইসেন্স প্রথা তুলে দেওয়া হয়। বহু উদ্যোক্তা বিনিয়োগ করেন। রডের কাঁচামাল সহজলভ্য করে জাহাজ ভাঙার পুরোনো লোহা। ঠিক এ সময়ই শক্তিশালী রড নির্মাণের জন্য যুক্তরাজ্য থেকে আনা হয় কারখানার যন্ত্রপাতি। ১৯৮৭ সালে আন্তর্জাতিক মানের উচ্চশক্তির ৬০ গ্রেড রড তৈরি শুরু হয় তাঁর হাত ধরে।

এক যুগ আগে নির্মাণশিল্পে জোয়ার শুরু হয়। আবাসন খাতের উত্থান ঘটে। জিডিপির প্রবৃদ্ধি বাড়তে থাকে। এ সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইলেন না আলীহোসাইন। ইতালি থেকে নিয়ে এলেন স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি।
আলীহোসাইন বলেন, ‘৪০ গ্রেডের তুলনায় ৬০ গ্রেড রড ব্যবহার করা হলে ৩০ শতাংশ রড সাশ্রয় হয়। নির্মাণশিল্পে এটা বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসে সে সময়। যুক্তরাজ্যের যন্ত্র দিয়েই ২০ বছর ধরে ৬০ গ্রেডের রড উৎপাদন করি। ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। অন্যরাও শুরু করে।’

 

ইস্পাত খাতে ডেডিকেটেড (নিবেদিতপ্রাণ) লোকজন কম। আর আমরা তো শুধু ইস্পাতশিল্প নিয়েই ৬৮ বছর ধরে পড়ে আছি। পণ্যের মান উন্নয়ন করলেই লোকজন মনে রাখবে। দেশের উন্নয়ন হবে। প্রতিষ্ঠানেরও মান বাড়বে।
আলীহোসাইন আকবরআলী, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিল।
এক যুগ আগে নির্মাণশিল্পে জোয়ার শুরু হয়। আবাসন খাতের উত্থান ঘটে। জিডিপির প্রবৃদ্ধি বাড়তে থাকে। এ সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইলেন না আলীহোসাইন। ইতালি থেকে নিয়ে এলেন স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি। বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেড কারখানায় ২০০৮ সালে প্রথম তৈরি হলো ৬০ গ্রেডের চেয়ে আরও বেশি শক্তির ৫০০ গ্রেড রড।
২০০৮ সালে উচ্চশক্তির রড উৎপাদনের যে বিপ্লব ঘটিয়েছেন, তা চলছে এখনো। ২০১৫ সালে সুউচ্চ স্থাপনা, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট, টানেল ও বড় ধরনের সেতু নির্মাণে ৮০ গ্রেডের বিএসআরএম ম্যাক্সিমা নিয়ে আসেন। ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকার জন্য ‘আলটিমা’, উপকূলীয় এলাকার জন্য লবণাক্ততা ক্ষয়রোধী রড ‘সেঞ্চুরা’ও আসে তাঁর হাত ধরে।

কথা বলতে বলতে বারবার একটা প্রশ্ন জাগে। জানতে চাইলাম, অন্যরা কেন আগে শুরু করতে পারেনি?

তিনি সরাসরি বললেন, ‘ইস্পাত খাতে ডেডিকেটেড (নিবেদিতপ্রাণ) লোকজন কম। আর আমরা তো শুধু ইস্পাতশিল্প নিয়েই ৬৮ বছর ধরে পড়ে আছি। পণ্যের মান উন্নয়ন করলেই লোকজন মনে রাখবে। দেশের উন্নয়ন হবে। প্রতিষ্ঠানেরও মান বাড়বে।’
দেশে উৎপাদিত রড বিশ্বমানের-এটা সবারই জানা। প্রতিবেশী ভারতের রডের মানের তুলনায় আমাদের এখানে মান কেমন? আলীহোসাইন জানালেন, ‘বিএসআরএমের রডের মান ভারতের শীর্ষস্থানীয় ইস্পাত কোম্পানিগুলোর মতো একই। দেশীয় আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানেরও এ সক্ষমতা আছে।’
বলে রাখা ভালো, আন্তর্জাতিক মানের সক্ষমতার বহু সনদ অর্জন করেছে বিএসআরএমের রড। রপ্তানি হচ্ছে ভারতের ত্রিপুরায়ও।

“সৃষ্টিকর্তার কাছে সব সময় ক্ষমা প্রার্থনা করি। আমাদের যা দিয়েছেন, সে জন্য সৃষ্টিকর্তাকে সব সময় কৃতজ্ঞতা জানাই। এটাই আমাদের জীবনকে সঠিক পথে রাখার সেরা উপায়।”     —–আলীহোসাইন আকবরআলী, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিল।

সাদামাটা জীবনঃ

এত সাফল্য যাঁর হাতে, তাঁর পারিবারিক জীবনই-বা কেমন? সেসব কথা অকপটে বলে গেলেন তিনি। জানালেন, বড় ছেলে আমীর আলীহোসাইন পড়াশোনা শেষ করে ২০০০ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। এক মেয়ে হংকং এবং দুই মেয়ে পাকিস্তানে বসবাস করছেন। নাতি-নাতনির সংখ্যা এখন ১০ জন।  এখনো খুব সহজ সরল জীবন যাপন করেন তিনি। আড়ম্বরপূর্ণ ও জাঁকজমকপূর্ণ জীবন পছন্দ করেন না। অহংকার নেই। সময় কাটাতে পছন্দ করেন পরিবারের সদস্য ও নাতি-নাতনিদের সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তার কাছে সব সময় ক্ষমা প্রার্থনা করি। আমাদের যা দিয়েছেন, সে জন্য সৃষ্টিকর্তাকে সব সময় কৃতজ্ঞতা জানাই। এটাই আমাদের জীবনকে সঠিক পথে রাখার সেরা উপায়।’

 

তাঁর প্রিয় শখ মানুষের জন্য কাজ করা। এখনো ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পড়াশোনার জন্য নাসিরাবাদে কারখানার পেছনে স্কুল গড়ে তুলেছেন। সেখানে ৫৫০ জন ছেলেমেয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করছে। যারা মেধাবী, তাদের পরে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়ার দায়িত্ব নেন। আবার যশোরে গরিব মেয়েদের জন্য প্রশিক্ষণকেন্দ্র চালু করেছেন। এসব কাজেই তৃপ্তি পান বলে জানালেন।
নিজের আরেক পরিবারের কথা জানালেন তিনি। বিএসআরএম পরিবার। পাঁচ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর সুবিশাল পরিবার। গর্ব করেই জানালেন, ‘আমার টিমটা দুর্দান্ত। মহামারির সময়ও সবাই দুর্দান্ত সহযোগিতা করেছে। তাতে কোনো বিপর্যয়ের মুখে পড়িনি। ঘুরে দাঁড়িয়েছি।’ বিএসআরএম গ্রুপে পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান হয়েছে আরও ১৫ হাজার শ্রমিক-কর্মীর।

 

তরুণদের প্রতি পরামর্শঃ  আলীহোসাইন মনে করেন, সাফল্য পাওয়ার কোনো ছোটখাটো পথ নেই। তিনি বলেন, প্রথমদিকে অভিজ্ঞতা নেওয়া হলো জরুরি। চাকরি হোক আর ব্যবসা হোক, অভিজ্ঞতা নিতে হবে আগে। পছন্দ বা অপছন্দে শুরুতে জোর দেওয়া উচিত নয়। অন্য কাউকে দেখে হতাশ হলে চলবে না। লোভ করা যাবে না। অবশ্যই চাকরি থেকে ব্যবসা ভালো। উদ্যোক্তা হওয়া ভালো। সে জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে আগে।
নিজের লিংকডইন প্রোফাইলেও তুলে ধরেছেন জীবন দর্শনের কথা, ‘সাফল্যের কোনো সহজ পথ নেই; কঠোর পরিশ্রমের বিকল্প নেই।’

বিএসআরএম এখনঃ   বিএসআরএম গ্রুপের এখন আট কারখানা। বছরে রড উৎপাদনক্ষমতা ১৬ লাখ টন, বিলেট ১৮ লাখ টন। নতুন বিনিয়োগ বাস্তবায়ন হলে আগামী দেড়-দুই বছরে দুটোর উৎপাদনক্ষমতা ২০ লাখ টন করে উন্নীত হবে।
দেশের পর আফ্রিকার দেশ কেনিয়াতেও সেরা হতে চায় বিএসআরএম। সেখানে কারখানা স্থাপন করা হচ্ছে। কাঁচামাল সংগ্রহের কাজে হংকংয়ে গঠন করা হয়েছে সহযোগী কোম্পানি।

আলীহোসাইন আকবরআলী এখনো চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন। বড় ছেলে আমীর আলীহোসাইন এখন ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ২০০০ সালে শিক্ষানবিশ কর্মী থেকে সব বিভাগে দক্ষতা অর্জনের ৯ বছর পর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হন তিনি। পরিচালক পদে আছেন জোহায়ের তাহেরালী (আলীহোসাইনের চাচাতো ভাই) ও তাঁর স্ত্রী তেহসিন জোহায়ের তাহেরালী এবং আমীর আলীহোসাইনের স্ত্রী সাবিন আমীর।

এখনো যেকোনো সমস্যা হলে বা নতুন প্রকল্পে পরামর্শ দেন আলীহোসাইন আকবরআলী। জীবনের গল্প শেষে জানালেন, ‘বাকি জীবনটাও ইস্পাতের মান উন্নয়ন নিয়েই থাকতে চাই। দেশের জন্য কাজ করে যেতে চাই।’

ShareTweetPin
Previous Post

আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার কথা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে

Next Post

পাম তেলের দাম লিটারে ৪ টাকা বেড়েছে

Related Posts

‘বেচারা কাদের যেন ঘাড় মটকে দিতে চেয়েছিল, এখন নিজেরই ঘাড় মটকে গেছে’
অপরাধ

‘বেচারা কাদের যেন ঘাড় মটকে দিতে চেয়েছিল, এখন নিজেরই ঘাড় মটকে গেছে’

July 3, 2025
14
পিআর পদ্ধতিতে গেলে দেশে বড় ধরনের বিভেদ হবে : এ্যানি
লীড স্লাইড নিউজ

পিআর পদ্ধতিতে গেলে দেশে বড় ধরনের বিভেদ হবে : এ্যানি

July 3, 2025
11
দেশের রিজার্ভ বেড়ে ২৬ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে
অর্থ কথা

ডলারের বিপরীতে টাকায় ঋণ নেওয়ার সুযোগ

July 3, 2025
5
১৯৭৩ সালের পর ডলারের সবচেয়ে বড় পতন
অর্থ কথা

১৯৭৩ সালের পর ডলারের সবচেয়ে বড় পতন

July 3, 2025
13
অবশেষে পটিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহার
অপরাধ

অবশেষে পটিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহার

July 3, 2025
15
ব্যাগেজ রুল সংশোধন: এখন বিদেশ থেকে আনা যাবে সোনার বার
অর্থ কথা

ব্যাগেজ রুল সংশোধন: এখন বিদেশ থেকে আনা যাবে সোনার বার

July 3, 2025
12
Next Post
পাম তেলের দাম লিটারে ৪ টাকা বেড়েছে

পাম তেলের দাম লিটারে ৪ টাকা বেড়েছে

No Result
View All Result

সাম্প্রতিক

‘বেচারা কাদের যেন ঘাড় মটকে দিতে চেয়েছিল, এখন নিজেরই ঘাড় মটকে গেছে’

পিআর পদ্ধতিতে গেলে দেশে বড় ধরনের বিভেদ হবে : এ্যানি

ডলারের বিপরীতে টাকায় ঋণ নেওয়ার সুযোগ

১৯৭৩ সালের পর ডলারের সবচেয়ে বড় পতন

অবশেষে পটিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহার

ব্যাগেজ রুল সংশোধন: এখন বিদেশ থেকে আনা যাবে সোনার বার

সম্পাদক ও প্রকাশক

প্রধান সম্পাদক: আহমেদ কবির
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : আহমেদ কবির

প্রধান কার্যালয়

ঢাকা ২৮নং রোড, গুলশান ১, ঢাকা, বাংলাদেশ, ১২১২ বাংলাদেশ

কর্পোরোট কার্যালয়

সানি টাওয়ার, এক্স ব্যুরো অফিস এশিয়ান টিভি ২৯১ সিডিএ অ্যাভিনিউ ২য় তলা, লালখান বাজার, চট্টগ্রাম।

আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক

Copyright © 2018-2025: Dainik Orthoniti II Design By : F.A.CREATIVE FIRM LTD

No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • বাংলাদেশ অর্থনীতি
  • আন্তর্জাতিক অর্থনীতি
  • অর্থনীতি সমাচার
  • মহানগর
  • অপরাধ
  • উপজেলা
  • শেয়ার বাজর
  • অর্থ কথা
  • মুদ্রা বাজার
  • বন্দর ও শিল্পনীতি
  • হাটবাজার অর্থনীতি
  • কর্পোরেট আইকন
  • আমদানি রপ্তানি
  • ফিউচার অর্থনীতি
  • ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প নীতি
  • দুর্নীতি
    • সারাদেশে দুর্নীতি
  • বাণিজ্য
  • ব্যংকিং অর্থনীতি
  • বিবিধ
    • জেলা উপজেলার অর্থনীতি
    • চাকরি
    • দেশ বিদেশ অর্থনীতি
    • শীর্ষ অর্থনীতি
    • শ্রমিক অর্থনীতি
    • জাতীয় অর্থনীতি
    • স্বাস্থ্য খাত
    • শিক্ষাখাত
    • খেলাধুলা
    • টেলিকম ও প্রযুক্তি
    • সারাদেশ
  • ভিডিও

Copyright © 2018-2025: Dainik Orthoniti II Design By : F.A.CREATIVE FIRM LTD

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Create New Account!

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In