ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই–অরেঞ্জের মালিকপক্ষ প্রতারণামূলকভাবে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে তাহেরুল ইসলাম নামের এক গ্রাহক গতকাল মঙ্গলবার গুলশান থানায় এমন অভিযোগ জানিয়ে মামলা করেছেন।
মামলায় ই–অরেঞ্জের মূল মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, তাঁর স্বামী মাসুকুর রহমান, মালিক বীথি আকতার, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) আমানউল্লাহ চৌধুরী, প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদসহ প্রতিষ্ঠানটির সব মালিককে আসামি করা হয়েছে। গতকালই আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে যান সোনিয়া মেহজাবিন ও মাসুকুর রহমান। কিন্তু আদালত তাঁদের জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ২৮ এপ্রিল থেকে নানা সময়ে বিভিন্ন ধরনের পণ্য কেনার জন্য টাকা দেওয়া হয়, যা একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের পর সরবরাহ করার কথা ছিল। কিন্তু ই–অরেঞ্জ এক লাখ ভুক্তভোগীর সঙ্গে প্রতারণা করে যাচ্ছে। ভুক্তভোগীরা ই-অরেঞ্জের অফিসে গিয়ে পণ্য সরবরাহ চাইলে জানানো হয়, কিছুদিনের মধ্যে পাঠানো হবে। কিন্তু আজ (গতকাল) পর্যন্ত কোনো পণ্য সরবরাহ করা হয়নি।
ই–অরেঞ্জের অফিশিয়াল নাম ই–অরেঞ্জ ডট শপ। দুই বছর আগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) থেকে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়া প্রতিষ্ঠান এটি। ট্রেড লাইসেন্সের ফরমে ই–অরেঞ্জের মালিকের নামের অংশে উল্লেখ রয়েছে সোনিয়া মেহজাবিন, পিতা শেখ আবদুস সালাম ও মাতা নাজমা সালাম।
গত সোমবার রাতে ঢাকার গুলশানে ই-অরেঞ্জের কার্যালয়ের সামনে এবং ই–অরেঞ্জের সাবেক ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর মাশরাফি বিন মুর্তজার মিরপুরের বাসার সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন ভুক্তভোগীরা। সাংসদ মাশরাফি বিন মুর্তজা বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক।
ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান ই–অরেঞ্জকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গতকাল মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল থেকে এ নোটিশ দেওয়া হয়। এতে সাত দিনের মধ্যে ই–অরেঞ্জকে সম্পদের হিসাব দিতে বলা হয়েছে।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, গত ৩১ জুলাই পর্যন্ত সম্পদ, দায় ও চলতি মূলধনের পরিমাণ কত জানাতে হবে। সরবরাহকারীদের কাছে বকেয়া থাকলে তার পরিমাণ কত, তা–ও জানাতে হবে। একই সময় পর্যন্ত টাকা নিয়েও পণ্য দেওয়া হয়নি, এমন গ্রাহক কত এবং গ্রাহকের কাছ থেকে কী পরিমাণ অর্থ নেওয়া হয়েছে, তার পরিমাণ জানাতে হবে।
Discussion about this post