রড, সিমেন্ট, টাইলস, রঙের প্রায় শতভাগ চাহিদা পূরণ করে দেশীয় কোম্পানিগুলো। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় এরা বিপদে পড়ে গেছে।
-
জুলাইয়ে সিমেন্টে উৎপাদন কমেছে ৩৫%।
-
এই বছর রডের চাহিদা ২০% পর্যন্ত কমার আশঙ্কা।
-
ছোট ও মাঝারি রড কারখানায় সীমিত উৎপাদন।
-
টাইলস-রঙের ব্যবসায় টান পড়েছে।
রড, সিমেন্ট, টাইলস, রংসহ বিভিন্ন ধরনের নির্মাণসামগ্রীর উদ্যোক্তারাও এখন বিপদে আছেন। বর্তমানে নির্মাণসামগ্রীর প্রায় শতভাগই দেশে উৎপাদিত হয়। কিন্তু করোনার কারণে আগের মতো ব্যবসা নেই এসব ভারী শিল্পের। বিশেষ করে সদ্য সমাপ্ত জুলাই মাসে নির্মাণসামগ্রীর ব্যবসায় মন্দাভাব ছিল।
সরকারি প্রকল্পগুলো বড় উদ্যোক্তাদের কিছুটা স্বস্তি দিলেও মাঝারি ও ছোটরা বিপাকে পড়েছে। জুলাই মাসে দু-চারটি বড় রড উৎপাদনকারী ছাড়া বাকি সবাই প্রায় বসে গিয়েছিল। এই মাসে সিমেন্ট উৎপাদন কমেছে প্রায় ৩৫ শতাংশ। এ ছাড়া মাঠপর্যায়ে টাইলস-রঙের ব্যবসাও ভালো যায়নি।
এদিকে ঈদের পর থেকে শিল্পকারখানা পুরোপুরি বন্ধ থাকলেও আজ থেকে শর্ত শিথিল করেছে সরকার।
রডের বাজার মন্দা
এক মাস ধরে দেশের ছোট-বড় বেশির ভাগ স্টিল মিল বন্ধ থাকায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন মালিকেরা। দেশে বর্তমানে মাঝারি ও বড় স্টিল মিল আছে ৩০-৩৫টি। এ খাতে সরাসরি দুই লাখের মতো শ্রমিক কাজ করেন। জানা গেছে, সরকারি প্রকল্পে রড সরবরাহকারী ও রপ্তানিমুখী কয়েকটি কারখানা বিশেষ ব্যবস্থায় খোলা ছিল। যেমন বিএসআরএম, জিপিএইচ ইস্পাত।
রাজধানীর অদূরে কাজলার শাহরিয়ার স্টিল মিল প্রায় এক মাস ধরে বন্ধ ছিল। কিন্তু শ্রমিক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা মিলিয়ে এক কোটি টাকাসহ বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হয়েছে। অথচ উৎপাদন নেই বললেই চলে।
স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও শাহরিয়ার স্টিল মিলের পরিচালক এ কে মাসাদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত এক মাস বেসরকারি খাতের জন্য তেমন রড উৎপাদিত হয়নি। বড় কারখানাগুলো খোলা ছিল সরকারি প্রকল্পে সরবরাহ করার
জন্য। কিন্তু আমরা মাঝারি মানের কারখানার মালিকেরা বিপাকে পড়েছি। বেতন, বিদ্যুৎ বিলের বোঝা চাপছে। সরকার এসব ক্ষেত্রে প্রণোদনা দিতে পারে।’
দেশে এখন ৩০-৩৫টি বড় ও মাঝারি রড কারখানা আছে। দেশে বার্ষিক ৫০-৫৫ লাখ টন রডের চাহিদার পুরোটাই স্থানীয় উৎপাদকেরাই জোগান দেন। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ সরকারি প্রকল্পে ও ৬০ শতাংশ বেসরকারি খাতে যায়। তারা করোনার কারণে ভুগছে। জানা গেছে, করোনার কারণে চলতি বছরে রডের চাহিদা ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। অর্থনীতিতে মন্দার কারণে বেসরকারি খাতে অবকাঠামো নির্মাণে কেউ উৎসাহিত হচ্ছেন না। এ ছাড়া গত এক বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে রডের কাঁচামাল স্ক্র্যাপের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ফলে করোনায় কাঁচামালের সংকটেও পড়েছে এই খাত।