চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নতুন সংযোজন হতে যাওয়া ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ারে প্রায় তিন কোটি টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম দেবে চিটাগং ক্লাব। গতকাল বিকেলে চিটাগং ক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ক্লাবের চেয়ারম্যান নাদের খান এ ঘোষণা দেন। চমেক হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ার নিয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।
হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, এই সার্ভিসের জন্য যে অবকাঠামো ও জনবল প্রয়োজন তা আমাদের আছে। কিন্তু লজিস্টিক সাপোর্ট হিসেবে বেশ কিছু যন্ত্রপাতি দরকার। লজিস্টিক সাপোর্ট হিসেবে সবমিলিয়ে প্রায় ৩ কোটি টাকার চিকিৎসা সরঞ্জামের বাজেট তুলে ধরেন হাসপাতাল পরিচালক।
চট্টগ্রামের মানুষ উদার মানসিকতার মন্তব্য করে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, আমি হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে যোগদানের পরপরই করোনার সাথে যুদ্ধ শুরু হয়। ওই সময় কিছু অভিজ্ঞতায় আমি অভিভূত। চট্টগ্রামের মানুষ ফোন করে বলেছেন- হাসপাতালের ডাইরেক্টর সাহেব বলছেন? আমি বলছি, জ্বী। তখন তিনি বলেছেন- আপনার কি প্রয়োজন বলুন। করোনায় হাসপাতালের জন্য-আপনাদের কিছু করতে চাই। এরকম প্রচুর ফোন আমি পেয়েছি। একসময় হাই ফ্লু ন্যাজাল ক্যানুলা জরুরি হয়ে উঠেছিল। কিন্তু সরকারি ভাবে তখন পর্যন্ত একটিও আমরা পাইনি। তবে কম হলেও ৬০টি হাই ফ্লু ন্যাজাল ক্যানোলা আমরা পেয়েছিলাম। এর সবই চট্টগ্রামের মানুষরাই দিয়েছেন। আমার বিশ্বাস, আপনাদের জন্য এই বাজেট তেমন কিছুই না। আগের মতোই আপনারা (চট্টগ্রামের মানুষ) সার্বিক সহায়তায় এগিয়ে আসবেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চিটাগং ক্লাবের চেয়ারম্যান নাদের খান বলেন- চমেক হাসপাতাল যে উদ্যোগটা গ্রহন করেছে, তা একমাত্র সিএমএইচ ছাড়া অন্য কোন সরকারি হাসপাতালে সম্ভবত নেই। মানুষকে দূরবস্থা থেকে রেহাই দিতে এই ওয়ান স্টপ সার্ভিসের প্রয়োজন। হাসপাতালে এই সার্ভিস চালু করতে যে বাজেট দেয়া হয়েছে, তা বলতে গেলে তেমন ব্যাপার না। আমরা সমন্বিতভাবে হাত বাড়ালে হয়ে যাবে। এই পুরো প্রজেক্টের (লজিস্টিক সাপোর্টের) দায়িত্ব আমরা (চিটাগং ক্লাব) নিলাম। এটি নিয়ে আমরা ক্লাবের পক্ষ থেকে একটি তহবিল গঠন করবো। ওই তহবিলে ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে ৫০ লাখ টাকা প্রদানের ঘোষণা দেন ক্লাবের বর্তমান চেয়ারম্যান নাদের খান। এর আগে অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে ক্লাবের প্রাক্তন চেয়ারম্যানবৃন্দ ক্লাবের পক্ষ থেকে সমন্বিত ভাবে এই সহযোগিতা প্রদানের পরামর্শ দেন। এর জন্য একটি তহবিল গঠনের পাশাপাশি আলাদা একটি কমিটিও গঠনের পরামর্শ দেন তারা। প্রাক্তন চেয়ারম্যানবৃন্দ ও অন্যান্য বক্তারা বলেন, হাসপাতালের পক্ষ থেকে যেসব সরঞ্জামের তালিকা দেয়া হয়েছে, আমাদের কমিটি পর্যালোচনা করে সেসব সরঞ্জাম কিনবেন। শুধু কিনে দিলেই হবেই না। এসব সরঞ্জাম মেইনেটেনেন্সের বিষয়টিও দেখতে হবে। তবে সকলেই যার যার অবস্থান থেকে সার্বিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।
Discussion about this post