অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে দুই বছরের শীর্ষে উঠে এসেছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে ঝিমিয়ে পড়া জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে। এ পরিস্থিতিতে জ্বালানি তেলের বাজার চাঙ্গা করতে সরবরাহ নিয়ন্ত্রিত রাখার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে ওপেক প্লাস। ওপেক প্লাসের বাজার নিয়ন্ত্রণের এ নীতির জেরেই জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। খবর রয়টার্স।
শুক্রবার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম ৫৮ সেন্ট বা দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৭১ ডলার ৮৯ সেন্টে দাঁড়ায়। এদিন ব্রেন্টের দাম ৭২ ডলার ১৭ সেন্ট পর্যন্ত ওঠেছিল, যা ২০১৯ সালের পর সর্বোচ্চ। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তেলের বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ৮১ সেন্ট বা ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি লেনদেন হয়েছে ৬৯ ডলার ৬২ সেন্টে। এর আগে ডব্লিউটিআইয়ের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬৯ ডলার ৭৬ সেন্টে ওঠে, যা ২০১৮ সালের অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ।
রয়টার্স জানায়, মঙ্গলবার ওপেক প্লাসের মন্ত্রিপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সংগঠনটি জানায়, তারা জ্বালানি তেল সরবরাহ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সম্মত হয়েছে। এদিকে জ্বালানি তেল সরবরাহবিষয়ক এক সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেলের মজুদ আশঙ্কার চেয়েও বেশি হারে কমে যায়। বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বিষয়গুলো মূল্যবৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে গত মাসে নির্মাণ ও উৎপাদন খাতে ৫ লাখ ৫৯ হাজার কর্মসংস্থান বেড়েছে। এতে জ্বালানি তেলের বাজার আরো চাঙ্গা হয়েছে।
জ্বালানি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বেকার হিউজেসের তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি প্রতিষ্ঠানগুলো চলতি সপ্তাহে জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন ক্ষেত্রগুলোতে উত্তোলনের পরিমাণ কমিয়ে এনেছে। গত ছয় সপ্তাহে প্রথমবারের মতো এ ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে জ্বালানি তেলের দাম অনেকটাই বেড়ে যায়।
পণ্যবাজার প্রতিনিধি প্রতিষ্ঠান পিভিএমের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি স্টিফেন ব্রেনক বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে ঢিমেতালে চলার পর ব্রেন্টের বাজারে বড় পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। জ্বালানি তেলের এ বাজার আদর্শের দাম ব্যারেলপ্রতি ৭০ ডলারের গণ্ডিতে পা রেখেছে। বৈশ্বিক অর্থনীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদাকে অনেক বেশি শক্তিশালী করে তুলবে।